এনআইডি কার্ডের তথ্য চুরি করে ব্যাংক কর্মকর্তার ঋণ-জালিয়াতি

এনআইডি কার্ডের তথ্য চুরি করে ব্যাংক কর্মকর্তার ঋণ-জালিয়াতি

স্টাফ রিপোর্টার:

নিজ নামের সাথে মিল রেখে অন্যের এনআইডি কার্ড জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে একাধিক ব্যাংক থেকে লাখ লাখ ঋণ ও ক্রেডিট কার্ড গ্রহণ করেছে এনআরবি ব্যাংকের নয়াবাজার শাখার এক কর্মকর্তা মোহাম্মদ আশরাফুল আলম । এঘটনায় জালিয়াতির শিকার হয়েছেন মুহাম্মাদ আশ্রাফুল আলম নামের অন্য আরেক ব্যক্তি। মুহাম্মাদ আশ্রাফুল আলমের জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর এবং অন্যান্য ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করে এনআরবি ব্যাংকের ঐ ককর্মকর্তা সিটিজেনস ব্যাংক, এবি ব্যাংক, পুবালী ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক এবং মিডল্যান্ড ব্যাংক থেকে মোটা অংকের ঋণ ও ক্রেডিট কার্ড গ্রহণ করেন।

ঘটনা সুত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি রিয়েল এস্টেট প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী মুহাম্মাদ আশ্রাফুল আলম সিটি ব্যাংক  ফরেন এক্সচেঞ্জ শাখা থেকে তার নিজের ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার আবেদন করেন। আবেদন করে জানতে পারেন, তার সিআইবি রিপোর্টে অনেক ঋণ ও ক্রেডিট কার্ড বকেয়া রয়েছে, এটা শুনে তিনি হতভম্ব হয়ে পড়েন। অত:পর তিনি সিটি ব্যাংকের পরামর্শে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে তার সিআইবি রিপোর্ট যাচাই করেন এবং সেখানে জানতে পারেন যে, তার নামীয় এনআইডি কার্ড ব্যবহার করে এনআরবি ব্যাংক নয়া বাজার শাখার মোঃ আশরাফুল আলম নামীয় কর্মকর্তা সিটিজেন ব্যাংক প্রিন্সিপাল শাখা সহ একাধিক ব্যাংক থেকে ঋণ ও ক্রেডিট কার্ড গ্রহণ করেছে। ঋণগ্রহণের আবেদনপত্রে ব্যাংক কর্মকর্তা মোহাম্মদ আশরাফুল আলম নিজের ছবি ব্যবহার করার পাশাপাশি রিয়েল এস্টেট চাকরিজীবী মোঃ আশরাফুল আলমের এনআইডি কার্ড ও অন্যান্য তথ্য ব্যবহার করেন। তবে বিভিন্ন ব্যাংকের ঋণ অনুমোদন কর্মকর্তারা কিভাবে এমন আবেদনে ঋণ ও ক্রেডিট কার্ড প্রদান করলেন তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

এ ঘটনায় মুহাম্মাদ আশ্রাফুল আলম ব্যাংকগুলোতে যোগাযোগ করলে ধীরে ধীরে বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠেন। তিনি জানান, তার নাম ও জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য চুরি করে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে এনআরবি ব্যাংক নয়াবাজার শাখার এক কর্মচারী লাখ লাখ টাকা ঋণ গ্রহন করেছে। তার নতুন করে ই-টিন খোলা হয়েছে। এই ঘটনায় তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন এবং দ্রুত আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য স্থানীয় মতিঝিল থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। থানার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এসআই কামরুন হাসান বিষয়টি তদন্ত করবেন এবং যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নিবেন।

এদিকে, বিজ্ঞ আইনজীবীরা এই ঘটনাকে গুরুতর একটি ক্রিমিনাল অফেন্স হিসেবে উল্লেখ করেছেন এবং এর বিরুদ্ধে কঠোর আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজনীয়তার কথা জানিয়েছেন। প্রশ্ন উঠছে, ব্যাংকগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা দুর্বল নাকি ব্যাংক কর্মকর্তারা এ ধরনের জালিয়াতির সাথে জড়িত। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের শাস্তির আওতায় আনার পাশাপাশি ব্যাংকগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থাও শক্তিশালী করার আহ্বান জানানো হচ্ছে।

এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে, সেজন্য দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ এবং ব্যাংকগুলোকে সাইবার নিরাপত্তা আরও উন্নত করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।

More News...

ঋণের টাকা লুটের যত আয়োজন

৪ ফকিরের সাম্রাজ্য