কালকিনিতে দুই পক্ষের সংঘর্ষে বাবা-ছেলেসহ নিহত ৩

কালকিনিতে দুই পক্ষের সংঘর্ষে বাবা-ছেলেসহ নিহত ৩
মাদারীপুর প্রতিনিধি: মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার বাঁশগাড়ি ইউনিয়নের ভাদুরী এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে ইউপি সদস্য বাবা ও তার ছেলেসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় আরও ১০ জন আহত হয়েছেন।  শুক্রবার ভোরে এই ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন-ইউপি সদস্য আতাউর রহমান আক্তার শিকদার (৪৮) ও তার ছেলে মারুফ শিকদার। (২০)।  এ ছাড়া সংঘর্ষে আহত ইউপি সদস্যের কর্মী সিরাজুল ইসলাম চৌকিদার (৩৫) ঢাকা নেওয়ার পথে মারা যান।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বাঁশগাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান সুমনের সঙ্গে একই ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আক্তার শিকদারের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। এই নিয়ে এলাকায় বেশ কয়েকটি হত্যাকাণ্ড ও একাধিক সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। এসব ঘটনার মামলায় দীর্ঘদিন এলাকা ছাড়া ছিলেন ইউপি সদস্য আক্তার শিকদারসহ তার পরিবারের সদস্যরা।
বৃহস্পতিবার ভোরে আক্তার শিকদারের বসতঘরে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। আক্তার শিকদার ও তার ছেলে মারুফ শিকদার এই খবর শুনে লোকজন নিয়ে শুক্রবার ভোরে এলাকায় আসেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান সুমনের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আক্তারের ওপর হামলা চালায়।
সংঘর্ষের সময় আক্তার শিকদার ও তার ছেলে মারুফ শিকদারকে  কুপিয়ে হত্যা করা হয়। নিহত ইউপি সদস্যের কর্মী পার্শ্ববর্তী এলাকা খুনেরচরের রশিদ চৌকিদারের ছেলে সিরাজুল ইসলাম চৌকিদার  হাসপাতালে নেওয়ার সময় মারা যান। এই ঘটনায় আরও ১০ জন আহত হন। আহত জব্বার ও জুয়েলসহ অন্যরা কালকিনির বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি ও প্রাথমিক চিকিৎসা নেন। বাকি আহতদের নাম জানা যায়নি।
নিহত আক্তার শিকদার কালকিনি উপজেলার বাঁশগাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নং ওয়ার্ডের তিনবারের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ও বাশগাড়ি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কর্মী ছিলেন।
ঘটনার পর এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি থাকায় অতিরিক্ত সেনাবাহিনী, র‌্যাব ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়। তবে এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।
নিহত ইউপি সদস্য আক্তার শিকদারের বাবা মতিন শিকদার বলেন, আমার ছেলে ও নাতিকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছেন চেয়ারম্যান সুমন ও তার লোকজন। এই ঘটনায় আমাদের আরও এক কর্মী মারা গেছেন। এর বিচার চাই। সুমন ও তার লোকজনের কঠিন বিচার চাই। আমার ছেলে ও নাতিকে এভাবে নৃশংসভাবে হত্যার বিচার চাই।
বাঁশগাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান সুমন বলেন, আমি ঢাকায় আছি। শুনেছি এলাকার অন্য দুটি পক্ষ এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। আমার নামে মিথ্যে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। আমিও সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এর বিচার চাই।
কালকিনি থানার এসআই সুশীল বলেন, ইউপি সদস্য আক্তার শিকদার ও তার ছেলে মারুফ নিহত হয়েছেন। এ ছাড়াও ঢাকা নেওয়ার পথে আরও একজন মারা গেছেন বলে জেনেছি।
কালকিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার উত্তম কুমার দাশ বলেন, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এলাকায় বিপুল পরিমাণ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এই ঘটনায় কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।

More News...

৭১’ রে যুদ্ধ না করে কমান্ডার পরিচয়ে ভুমিদস্যুতার অভিযোগ

শোক সংবাদ: খুলনা মহানগর বিএনপি’নেতা জহর মীর আর নেই