কাহালুর জামগ্রামে কৃষকের ধান কেটে নিল কৃষকলীগ নেতা সালাম

কাহালুর জামগ্রামে কৃষকের ধান কেটে নিল কৃষকলীগ নেতা সালাম

কাহালুর জামগ্রামে কৃষকের ধান কেটে নিল কৃষকলীগ নেতা সালাম

বগুড়া জেলা প্রতিনিধিঃ

বগুড়ার কাহালু উপজেলার জামগ্রাম ইউনিয়নের মানিক ও মামুন নামের ২ কৃষকের প্রায় আড়াই বিঘা জমির কাঁচা ধান দিনে দুপুরে কেটে নেওয়া হয়েছে। জমিতে ধানের লম্বা খড় পড়ে রয়েছে অথচ কাঁচা ধানের শীষ কেটে নেওয়া হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে কাহালু উপজেলার জামগ্রাম ইউনিয়নের জামগ্রাম টু দুর্গাপুর রোডের বেলেগাড়ির চর ও সুলাল চড়া মাঠে গিয়ে এমন দৃশ্য চোখে পড়ে। ক্ষতিগ্রস্ত ওই কৃষকের নাম মানিক হোসেন ও মামুন মিয়া। জামগ্রাম ইউনিয়নের কৃষকলীগের সভাপতি আব্দুস সালামের বিরুদ্ধে এ ধান কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয় আমিন হোসেন, আব্দুল আলীম, শামীম হোসেনসহ অন্তত সাতজন কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে জামগ্রাম সরদার পাড়া গ্রামের বেলেগাড়ির চর ও সুলাল চড়া মাঠে আড়াই বিঘা ধানি জমি কিনে চাষাবাদ করে আসছিলেন কৃষক মানিক ও মামুনের পিতা আলতাব হোসেন সরদার ওরফে আলতাব মাস্টার। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শেষের দিকে সেই জমি নিজের দাবি করে দখলে নেন জামগ্রাম ইউনিয়ন কৃষকলীগের সভাপতি আব্দুস সালাম সরদার ও তার ভাই বোনেরা।

সরকার পতনের পর জমি দখলকারী ওই কৃষকলীগ নেতা এলাকা ছাড়ার সুযোগে পুনরায় জমিতে লোকজন দিয়ে ধান চাষাবাদ করেন কৃষক মানিক ও মামুন কিন্তু পাকা ধান ঘরে তোলার আগেই সেই জমির ধান দিনে দুপুরে সালাম তার লোকজন দিয়ে কেটে নেওয়া হয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক মানিক ও মামুনের বড় বোন জামাই রজব আলী বলেন, ২৭/৪/১৯৬৭ সালে সালামের দাদি হামিরুনের নিকট হতে জামগ্রাম মৌজায় সম্পত্তি ক্রয় করেন যার জে.এল. নং-১৫৪, এমআর খতিয়ান নং- ২৬১/২৪৩, আরএস খতিয়ান নং- ২৫৯, দাগ নং- সাবেক দাগ৫৯১/হাল দাগ-২০৭২ এ ৩৩ শতক, সাবেক দাগ- ৫৮৬/হাল দাগ- ২০৭৩ এ ২৫ শতক, সাবেক দাগ-৮২০/হাল দাগ- ২৩৭৮ এ ৩২ শতক, সাবেক দাগ-৫৫৮ এ ৩০ শতক, সাবেক দাগ-৯২২/হাল দাগ-২৩৪৯ এ ৩০শতক মীর মাহমুদ সরদার হেপা কিবলা দলিল মুলে ক্রয় করেন মীর মাহমুদ সরদার যার দলিল নং-১২২৩২। আর ১০/২/১৯৭৬ সালে মীর মাহমুদ সরদারের কাছ থেকে আমার শ্বশুর ও মানিক ও মামুনের পিতা আলতাব আলী সরদার ওরফে আলতাব মাস্টার জামগ্রাম মৌজায় সম্পত্তি ক্রয় করেন যার জে.এল. নং-১৫৪, এমআর খতিয়ান নং- ২৬১/২৪৩, আরএস খতিয়ান নং- ২৫৯, দাগ নং- সাবেক দাগ৫৯১/হাল দাগ-২০৭২ এ ৩৩ শতক, সাবেক দাগ- ৫৮৬/হাল দাগ- ২০৭৩ এ ২৫ শতক, সাবেক দাগ-৮২০/হাল দাগ- ২৩৭৮ এ ৩২ শতক, সাবেক দাগ-৫৫৮ এ ৩০ শতক, সাবেক দাগ-৯২২/হাল দাগ-২৩৪৯ এ ৩০শতক হেপা কবলা দলিল মূলে ক্রয় করেন যার দলিল নং- ৪৯২০।

আমার শ্বশুর মৃত্যু বরণ করলে জামগ্রাম ইউনিয়নের কৃষকলীগের সভাপতি আব্দুস সালাম ও তার ভাই বোনেরা সহ আর দলবল নিয়ে একাধিকবার আমার, মানিক ও মামুন সহ তাদের পরিবারের ওপরে হামলা করে উক্ত দাগের সম্পত্তির বাইরেও প্রায় ৭বিঘা সম্পত্তির জমি দখল নেয়।এই বিষয়ে মহামান্য আদালতে তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলাও রয়েছে। যার কাহালু থানায় সাধারণ ডায়েরি মামলা নং-১৩১/২৪ কাহালু, ও বগুড়ার জেলা ম্যাজিস্ট্রেসি কোর্টের মামলা নং-৩৩৪/সি-কাহালু ও মামলা নং- ৩৮৬/সি-কাহালু।

মানিক ও মামুনের দীর্ঘদিনের ভোগদখলকৃত সম্পত্তি দখলে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে কৃষকলীগ নেতা আব্দুস সালাম ও তার লোকজন। এখন তার লাগানো কাঁচা ধান কেটে নিয়ে গেছে। এতে তার প্রায় লক্ষাধিক টাকা ক্ষতি হয়েছে।

এছাড়াও আব্দুস সালামের বিরুদ্ধে জামগ্রাম হাটখোলা পাড়া গ্রামেরআব্দুস সাত্তারের পুত্র জুয়েলের ১ বিঘা জমি ও জামগ্রাম বড়পাড়া গ্রামের মৃত রমজান আলীর পুত্র শাহ আলমের ১৫বিঘা জমি জবর দখল করার অভিযোগ রয়েছে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত কৃষকলীগ নেতা আব্দুস সালাম বলেন, জমিটি নিয়ে প্রতিপক্ষের সঙ্গে আদালতে মামলা রয়েছে।১বছর আগে আমরা জমিগুলো দখল করেছি। আমাদের জমির ধান আমরা কেটেছি,দেখি কার ক্ষমতা আছে আমাদের জমি দখল করে।

More News...

জামালপুরে ফজলুল হকের পাঁচ তালা বিল্ডিং এর ২য় তলার ইউনিটে ৫০ পিচ ইয়াবা সহ ৪ নারী গ্রেফতার 

তারাকান্দায় মহিলা সদস্য হাসনা কর্তৃক প্রতারনা করে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ