কোটিপতি আজাদের জাঁদুর কাঠি ‘বঙ্গবন্ধু’

কোটিপতি আজাদের জাঁদুর কাঠি ‘বঙ্গবন্ধু’

মনিরুল হক সোহাগঃ
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ রাজউকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিকট একধরনের জাদুর কাঠি আছে যার স্পর্শে রাতারাতি তারা সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলেন। সংবাদমাধ্যম গুলো নিয়মিতই এমন দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে সংবাদ প্রচার করে আসছে। মাঝেমধ্যে বেনজির-মতিউরের মতো হাতে গোনা দুয়েকজন বেকায়দায় পড়লেও বাকীরা থেকে যাচ্ছেন ধরাছোয়ার বাইরে। ছিটেফোঁটা প্রভাবও পড়ে না এসব দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের কপালে। আর একারনেই দুর্নীতির মাত্রা দিনে দিনে বেড়েই চলছে। দুর্নীতি প্রতিরোধের সংস্থা দুর্নীতি দমন কমিশন যেখানে অসততার প্রশ্নে জড়িয়ে পড়েছে। সেখানে রাজউকের কর্মচারীদের ঘুষ দুর্নীতির বেপরোয়া গতির লাগাম টেনে ধরা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এমন একজন দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ। তিনি রাজউক সদর দপ্তরের সিভিল বিভাগে নির্বাহী প্রকৌশলী। দুর্নীতির মাধ্যমে গড়েছেন একাধিক বাড়ি-গাড়ি-প্লট সহ কোটি কোটি টাকার সম্পদ।

বঙ্গবন্ধু-বঙ্গবন্ধু জিগির তুলে ফ্যাসিস্ট হাসিনার নৌকায় উঠে বিগত ১৫ বছরের শেষ ৪/৫ বছরেই কামিয়ে নিয়েছেন শত বছরের বেতনের সমপরিমান টাকা। অনুসন্ধানে জানা গেছে, আবুল কালাম আজাদের গ্রামের বাড়ী পটুয়াখালী সদর উপজেলার চারাবুনিয়া গ্রামে। ১৯৯০ সালে রাজউকের চাকুরীতে প্রবেশ করেন। চাকুরী জীবনের বেশীর ভাগ সময় ঘুষ-দুর্ণীতির সাথে নিজেকে জড়ানো সুযোগ না পেলেও ফ্যাসিস্ট হাসিনার নৌকায় উঠে বিগত ১৫ বছরে গড়ে তুলেছেন অবৈধ সম্পদের পাহাড়। যার মধ্যে রাজধানীর শান্তিনগরে স্কাইভিউ হ্যারিটেজ ভবনে ৫হাজার ৬শ স্কয়ার ফিটের বিলাশবহুল একটি ফ্ল্যাট।

জমি ও পাকিং সহ এর বর্তমান বাজার মুল্য অন্তত ৭কোটি টাকা। পশ্চিম রাজারবাগের ৯১/৬নং হোল্ডিংয়ের বাড়ীতে রয়েছে দুটি ফ্ল্যাট। পূর্বাচল-রূপগঞ্জ গুতিয়াব মৌজায় ২৬৯৭/১ নং খতিয়ানে ৪.৯৫ শতাংশ জমি, গ্রামে বাড়ী পটুয়াখালী সদরের বল্লভ মৌজায় ০.৫১ শতাংশ জমি, চারাবুনিয়া মৌজায় ৩দাগে ৯৯.৫০ শতাংশ জমি, সদর মৌজায় ৭ শতাংশ জমি রয়েছে। যার বর্তমান বাজার মূল্য সব মিলিয়ে অন্তত ৭০কোটি টাকা। এছাড়া তার নামে বেনামে আরো সম্পদ সহ বিভিন্ন ব্যাংকে মোটা অংকের টাকা গচ্ছিত রয়েছে। সরকারী চাকুরীতে নির্বাহী প্রকৌশলীর চেয়ারটা ঘুষ রাজ্যের একটি অন্যতম সিংহাসন। এই সিংহাসনে বসলেই হাতের কাছে চলে আসে কারিকারি টাকা। নির্বাহী প্রকৌশলীর সই-স্বাক্ষর ছাড়া কোন ফাইলই পাশ হয় না।

একারনে নির্বাহী প্রকৌশলীর সাম্রাজ্যকে ঘুষের হাটও বলা হয়ে থাকে। আবুল কালাম আজাদ পটুয়াখালী সদর উপজেলার চারাবুনিয়া গ্রামের কেরামত আলী হ্ওালাদারের ছেলে। সুত্র জানায়, তিনি ৪হাজার ৮শ টাকা বেতনে ২২ডিসেম্বর-১৯৯০ সালে উপ-সহকারী হিসেবে রাজউকের চাকুরীতে যোগদান করেছিলেন। ফ্যাসিস্ট হাসিনার বঙ্গবন্ধু শ্লোগান দিয়ে শেষ ৪/৫ বছরেই কামিয়ে নিয়েছেন শত বছরের বেতনের সমপরিমান টাকা। এবছর সেপ্টেম্বর মাসেই তিনি অবসরে যাবেন।

More News...

খাঁটি আওয়ামীলীগার সামিউলের অঢেল সম্পদ

অবৈধ সম্পদে লালেলাল ইঞ্জিঃ জামাল