গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল ওসমানী’র যথাযথ মূল্যায়ন জরুরী

গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল ওসমানী’র যথাযথ মূল্যায়ন জরুরী

বিশেষ প্রতিনিধি:

বাঙ্গালী জাতির গর্ব, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের এক অনন্য অহংকার-১৯৭১’র স্বাধীনতা যুদ্ধ। যা আমাদের জাতির কাছে দীর্ঘ প্রতিক্ষিত ও লালিত স্বপ্নের বাস্তবায়ন। যাকে আমরা মুক্তিযুদ্ব হিসেবে আখ্যায়িত করি। সেই মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী পেশাদার সেনা কর্মকর্তা ও পরবর্তীতে জেনারেল। যিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনী থেকে কর্ণেল হিসেবে ১৯৬৭ সালে ১৫ ফেব্রুযারী অবসর গ্রহণ করেন।অত:পর,জাতির ক্রান্তিলগ্নে আবারো বাঙ্গালী জাতির স্বাধীনত ও সার্বভৌমত্বের স্বার্থে মুক্তিযুদ্বে ঝাঁপিয়ে পড়েন ১৯৭১ সালে।সেই চির স্মরণীয় ব্যক্তিত্ব মুক্তিযুদ্বের সর্বাধিনায়ক বঙ্গবীর জেনারেল এম এ জি ্ওসমানীর ৪১ তম মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষ্যে গতকাল শনিবার (ফেব্রুয়ারী২২, ২০২৫) ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। বঙ্গবীর ওসমানী স্মৃতি পরিষদ আয়োজিত মরহুম বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ আবুল হোসেন খাজা প্রতিষ্ঠিত প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয়-উপদেষ্টা ফারুক ই আজম, বীর প্রতীক। মাননীয় উপদেষ্টা ফারুক ই আজম তাঁর স্মৃতিচারণামূলক বক্তব্যে বলেন-মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী জেনারেল এম.এ.জি ওসমানী একজন গণতন্ত্রের ধব্জাধারী জেনারেল। যিনি বাংলাদেশের গণতন্ত্র প্রতি অবিচল থেকে ১৯৭৪ সালে ১লা মে শেখ মুজিবের মন্ত্রীসভা, জাতীয় সংসদ ও আওয়ামীলীগ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন। অধিকন্তুু তিনি সেদিনকার গণতন্ত্র ও গণতন্ত্র হরণকারী একদলীয় সরকার ব্যবস্থা “বাকশাল” প্রবর্তনের বিরোধীতা করে পদত্যাগ করেন। বাঙ্গালী জাতির প্রতি অনুগত থেকে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় অবিচল ছিলেন তারই প্রমাণ জেনারেল ওসমানী। সর্বোপরি, স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশে গণতন্ত্রের দৃঢ়চেতা, সাহসী ও দেশপ্রেমিক জননেতা জেনারেল এম.এ.জি ওসমানী চিরদিন অমর হয়ে থাকবেন। তিনি আরো বলেন-মহান সৃষ্টিকর্তা জেনারেল ওসমানীকে একজন বিজয়ী সর্বাধিনায়ক হওয়ার মতো বিরল সন্মানে ভূষিত করেন। উক্ত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন মেজর জেনারেল (অবঃ) এম.আজিজুর রহমান’ বীর উত্তম। তিনি তাঁর স্মৃতিচারণামূলক বক্তব্যে বলেন-জেনারেল ওসমানীকে নিয়ে যে ধোঁয়াশা তোলা হয়েছে, তাও দূর করার সময় এসেছে আজ। জেনারেল ওসমানীর মতো অধিনায়কের সরাসরি তত্ত্বাবধানে আমি যুদ্ধ করেছি ও তাঁর নেতৃত্ব পাবার সুভাগ্য আমার হয়েছে। তাঁর সহচর হিসেবে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি। তিনি আরো বলেন এবারের ৪১ তম মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপনে আমি উপস্থিত থেকে নিজেকে ধন্য মনে করছি। এছাড়াও বঙ্গবীর ওসমানী স্মৃতি পরিষদের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকটি দাবীও তুলে ধরা হয়েছে। এসব দাবী হলো- বঙ্গবীর জেনারেল ওসমানী নাম পাঠ্যপুস্তকে অবশ্যই থাকবে। রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় জন্ম-বার্ষিকী ও মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপন করবে সরকার। রাষ্ট্রের যেকোন ১০টি মেগা প্রকল্পের মধ্যে অন্তত একটি প্রকল্পের নাম ওসমানী’র নামে নামকরণের দাবী জানানো হয়। বঙ্গবীর ওসমানী স্মৃতি পরিষদের মহাসচিব এম.এ রকিব খানের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন-ডাক্তার মোস্তফা আহমদ, স্বাধীনতা উত্তর (১৯৭২-৭৪) বাংলাদেশে নৌ-পরিবহনের মন্ত্রণালয়ের উপসচিব পরবর্তীতে সাবেক সচিব ও রাষ্ট্রদূত এ.এইচ.এম মোফাজ্জল করিম, সাবেক রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আসহাব উদ্দিন (অবঃ) সাবেক সচিব, জনাব এহছানে এলাহী, সাবেক সহকারী প্রধান, বাংলাদেশ বিমান বাহিনী, এয়ার ভাইস মার্শাল এহসানুল গণি চৌধুরী (অবঃ), প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ওসমানী ফাউন্ডেশন, লন্ডনে’র মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন চৌধুরী, জেনারেল ওসমানী পরিরারের সদস্যবৃন্দ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্ঠা ও সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ড,ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী এবং উপস্থিত ছিলেন খ্যাতনামা বীর মুক্তিযোদ্ধা বৃন্দ ও বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব মোঃ সিদ্দিকুর রহমানসহ প্রমুখ ব্যক্তিবর্গ।

More News...

পালিয়ে থেকে সম্পত্তি বেচতে ক্রেতা খুঁজছেন নসরুল হামিদ

ঋণের টাকা লুটের যত আয়োজন