গরীবের চাল-আটা মুরাদরাই খেয়ে ফেলছে মাঝপথে

গরীবের চাল-আটা মুরাদরাই খেয়ে ফেলছে মাঝপথে

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
সরকার দিচ্ছে, মুরাদরাই খাচ্ছে, গরীব পাচ্ছে না, টিসিবি বা ওএমএস’র চাল-আটা বিতরনে এমন অভিযোগ দীর্ঘ পুরনো। ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাড়িয়েও চাল-আটা পাচ্ছে না নিন্মআয়ের গরীব মানুষ। অথচ বিতরনকারী সরকারী কর্মকর্তা ও নিয়োগকৃত ডিলাররা সিন্ডিকেট করে ৭৫ ভাগ পন্য চোরাই পথে বিক্রি করে নিজেদের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা করে নিচ্ছে আর বাকী ২৫ ভাগ পন্য বিতরনের জন্য অভাবী মানুষ গুলোকে সারাদিন লাইনে দাড় করিয়ে রেখে খালী হাতে ফিরিয়ে দিচ্ছে। এমন অভিযোগ খাদ্য অধিদপ্তর কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত রাজধানীর জুরাইনে অবস্থিত ঢাকা রেশনিং প্রধান নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় ঘিরে। এই অফিসের সহকারী নিয়ন্ত্রক সাব্বির আহমেদ মুরাদের বিরুদ্ধে চাল-আটা বিতরনের ডিলারদের সাথে সিন্ডিকেট গড়ে এমন অনিয়ম করার অভিযোগ রয়েছে।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, ওএমএস’র দোকান সেল/ট্রাক সেল নিয়ে সমাজের পিছিয়ে পড়া দরিদ্রদেরকে নিয়ে অনেক ধরণের হয়রানি ও কারসাজি করে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে সরকারী কর্মকর্তা ও তাদের দোসররা। সরকার দরিদ্রদের কথা বিবেচনা করে স্বল্প দামে খোলা বাজারে চাল ও আটা বিক্রি করছে। এসব পণ্য বিক্রির জন্য দোকান সেল ও ট্রাক সেলের ডিলারশিপ প্রদান করেছে। তবে ডিলারদের কাছ থেকে চাল ও আটা কতজন দরিদ্র লোকরা পায় তা বিবেচনা করা দরকার। ডিলাররা দোকান সেলের ক্ষেত্রে চাল ও আটা গোপনে নিজেদের পছন্দমত দোকানে বেশি দামে বিক্রি করে বলে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। বঞ্চিত হচ্ছে দরিদ্র লোকরা। দোকানের সামনে সারাদিন প্রচন্ড ভীড় লেগে থাকে। লাইনে দাঁড়িয়েও অনেকে চাল ও আটা পায় না। ট্রাক সেলের ক্ষেত্রেও একই অভিযোগ।

দরিদ্র লোকরা ট্রাকের পেছনে ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে চাল ও আটা পায় না। ট্রাকগুলো নির্ধারিত স্থানে সকাল ৯ ঘটিকার মধ্যে আসার কথা থাকলেও সকাল ১১ ঘটিকার আগে আসে না। তারপর ট্রাকে বসে ডিলার ও বিক্রেতারা অতি মন্থর গতিতে চাল-আটা পরিমাপ করতে করতেই দিন শেষ করে। ৫কেজি/আটা পরিমাপ করে একজনকে বিদায় দিতে ১০ থেকে ১৫ মিনিট সময় লাগে। উদ্দেশ্য একটাই। কখন বিকেল ৫ টা বাজবে। সাথে সাথে অবশিষ্ট চাল ও আটা নিয়ে ট্রাক’ চম্পট দিবে। আবার অনেক ট্রাক বিকেল ৪ টার আগেই চাল ও আটা নিয়ে চলে যায় ও নিজেদের পছন্দমত দোকানে উচ্চ মূল্যে বিক্রি করে। সহকারী নিয়ন্ত্রক সাব্বির আহমেদ মুরাদের সাথে সিন্ডিকেট গড়ে ডিলাররা এসব অনিয়ম করেন বলে তথ্য প্রমান রয়েছে। তার বিরুদ্ধে খাদ্য মন্ত্র¿ণালয়ে দায়ের করা’ ভুক্তভোগীর অভিযোগ থেকে আরো জানা গেছে, ভুক্তভোগিরা সহকারী নিয়ন্ত্রক সাব্বির আহমেদ মুরাদকে এবিষয়ে একাধিকবার অভিয়োগ জানিয়েও কোন প্রতিকার পায়নি।

ভুক্তভোগিরা জানান, দোকান সেল ও ট্রাক সেলের ডিলাররা সাব্বির আহমেদ মুরাদকে প্রতি মাসে প্রচুর টাকা প্রদান করেন। একারনে তিনি ডিলারদের অনিয়মকে প্রশ্রয় দিচ্ছেন। তিনি অনেক ডিলারের অনিয়ম পাওয়ার পর তার লাইসেন্স বাতিল করবেন বলে ভয়-ভীতি দেখান। পরে ‘বিশেষ ব্যবস্থায়’ ম্যানেজ হয়ে যান। এভাবেই ডিলারের কাছ থেকে প্রচুর অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন।

জুরাইনে খাদ্য অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণাধীন ঢাকা রেশনিং এর একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, জয়বাংলা লীগের দাপটে কোন কিছুই তিনি সমীহ করতেন না। কেই কোন প্রতিবাদ করলে নিজেকে গোপালগঞ্জ বলে হুংকার দিতেন। অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করতেন।

এসব বিষয়ে সহকারী নিয়ন্ত্রক সাব্বির আহমেদ মুরাদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এসবের সাথে তার কোন সর্ম্পক্ততা নেই। এগুলো ঢাকা রেশনিংয়ের প্রধান নিয়ন্ত্রক নিয়ন্ত্রন করে। তিনিই ভালো বলতে পারবেন।

More News...

ঢামেক মর্গে পড়ে আছে জুলাই বিপ্লবের ৬ শহীদের মরদেহ

কেরানীগঞ্জে অপহৃত শ্রমিক উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৬