ঘুষের টাকায় কামাল উদ্দিনের সম্পদের পাহাড়

ঘুষের টাকায় কামাল উদ্দিনের সম্পদের পাহাড়

ঘুষের টাকায় কামাল উদ্দিনের সম্পদের পাহাড়

ফারহান-মুরাদঃ
একজন সরকারী কর্মকর্তা। যে কিনা চাকুরি শুরু করে দেশ ও জনগনের সেবা করার জন্য। কিন্তু এই ব্যক্তি যদি জনগনের সেবা না করে নিয়োগ বাণিজ্যে জড়িয়ে পড়েন, বিসিএস এর মত সংবেদনশীল একটি পোস্ট নিয়ে যে কিনা শত কোটি টাকার ঘুষ বাণিজ্য করেন। তাকে আপনি কি বলবেন ? এমন প্রশ্নের উত্তর খুজতেই বেরিয়ে আসে বাংলাদেশ সরকারী কর্ম কমিশন (পিএসসি)এর সাবেক বোর্ড মেম্বার কামাল উদ্দিন আহমেদের অবৈধ সম্পদের ফিরিস্তি।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন বিপিএসসি’র সাবেক চেয়ারম্যানের গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলীর কথা মনে পড়ে তো। আবেদ আলীর আরেক বস বিপিএসসি’র বোর্ড মেম্বার কামাল উদ্দিন আহমেদ। কামাল উদ্দিন আহমেদ ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির শীর্ষ পদের একজন বড়কর্তা। খুনি হাসিনার যুগে কামাল উদ্দিন আহমেদরা পিএসসি নামক প্রতিষ্ঠানটিকে বাপ-দাদার বসতভিটায় পরিনত করে লুটপাটের স্বর্গরাজ্যে পরিনত করেছিলেন। বলির পাঠা ড্রাইভার আবেদ আলী যেখানে শতকোটি টাকার মালিক খোনে কামাল উদ্দিনের মতো চোরেরা কত কোটি টাকার মালিক তা জানলে গাঁ শিউরে উঠবে।

সুত্র জানায়, রাজধানীর অভিজাত এলাকায় কামাল উদ্দিনের তিনটি দৃষ্টিনন্দন বাড়ি রয়েছে। দুটি বিলাসবহুল গাড়ি। সেই সাথে আছে দুইটি স্ত্রী। তবে সম্পদের বেশীর ভাগই রয়েছে তার দুই স্ত্রীর নামে। মিরপুরের রূপনগর আবাসিক এলাকার ২৭ নম্বর রোডের ৩০ নম্বর লঙ্গাইর নামের ৫তলা বাড়িটি কামাল উদ্দিন উপার্জিত অর্থে তৈরি। বাড়িটির নামকরণ করেছেন তার গ্রামের বাড়ি গফরগাঁওয়ের লংগাইর গ্রামের নামে। এই বাড়িটি কামাল উদ্দিনের প্রথম স্ত্রী তাহমিনা কামালের নামে।
উত্তরার ৯ নাম্বার সেক্টর ৪ নাম্বার আলিশান বাড়িটির মালিক কামাল উদ্দিন নিজে। সরকারি চাকুরী করে কামাল উদ্দিন সোনার হরিণ পেয়ে গেছেন। উত্তরার ৯ নাম্বার সেক্টরের ১২ নাম্বার ৭তলা বাড়িটি কামাল উদ্দিনের দ্বিতীয় স্ত্রী আসমাউল হুসনার নামে। গুঞ্জন আছে কামাল উদ্দিন আসমাউল হুসনার সাথে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন। পরে ধরা খেয়ে তারা বিয়ে করেন। পরে কামাল উদ্দিন ৭কোটি টাকায় এই বাড়িটি তার দ্বিতীয় স্ত্রী আসমাউল হুসনাকে কিনে দেন। গফরগাঁওয়ের লংগাইর গ্রামেও রয়েছে বাগান বাড়ী সহ শত বিঘা জমি।

ড্রাইভার আবেদ আলী কান্ডে সিআইডির হাতে গ্রেপ্তার হওয়া ১৭ জন চুনোপুটির পেছনে দানব কামাল উদ্দিন আহমেদ রয়ে গেছেন ধরাছোয়ার বাইরে। আবেদ আলীর ঘুষকান্ডে কামাল উদ্দিন আহমেদ যে শতভাগ জড়িত তাতে কোন সন্দেহ নেই।

সুত্র জানায়, বিপিএসসি’র সাবেক গাড়িচালক আবেদ আলীকে নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। রাজনৈতিক-সামাজিক কর্মকাণ্ড ও দান করার বিষয়ে নানা কন্ট্রিটকে উঠে আসে আবদ আলী। পরিবার অসচ্ছল হওয়ায় মাত্র আট বছর বয়সে জীবিকার তাগিদে আবেদ আলী পাড়ি জমান ঢাকায়। সে সময় অনেক কষ্টে দিন কাটাতেন তিনি। এরপর শেখেন গাড়ি চালানো। চাকরি নেন বিপিএসসিতে। দিনে দিনে জড়িয়ে পড়েন বিসিএসসহ বিপিএসসি’র অন্যান্য পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস চক্রে। আর এই চক্রের অন্যতম ৫জন হোতার মধ্যে কামাল উদ্দিনের নাম দেখা যাবে উপরের দিকে।
পিএসসি সংশ্লিষ্ট একটি সুত্র জানায়, ফ্যাসিস্ট খুনী হাসিনার বোন কমিশন রানী শেখ রেহেনার তহবিলে ১০কোটি টাকা ঘুষ দিয়ে পিএসসি’র বোর্ড মেম্বারের পদ বাগিয়ে নিয়ে ছিলেন কামাল উদ্দিন আহমেদ। পিএসসি’র বিসিএস ক্যাটাগরি সহ ৩০টি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে খুনী হাসিনার শাসনামলে। কামাল উদ্দিন সিন্ডিকেটরা এসব প্রশ্ন পত্র ফাঁস করে কোটি কোটি টাকার সম্পদ গড়ে তোলেছেন নিজেদের ভোগ বিলাশের জন্য।

এব্যাপারে পিএসসির বোর্ড মেম্বার কামাল উদ্দিন বক্তব্য জানতে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।