ছাত্র-জনতা হত্যাকারী মাষ্টারমাইন্ড হাসু অধরা

ছাত্র-জনতা হত্যাকারী মাষ্টারমাইন্ড হাসু অধরা

মোঃ আহসানউল্লাহ হাসান: নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের শিমড়াইল মোড়ে গণঅভুত্থানে ছাত্র জনতার হত্যাকারী শামীম ওসমান বাহিনীর অন্যতম মাষ্টারমাইন্ড সড়ক ও জনপদ বিভাগের ঠিাকাদার নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাতখুনের অন্যতম আসামী হাসমত আলী হাসু অধরা। পাঁচ আগষ্টের পর তিনি বীরদর্পে এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তার বিরুদ্ধে কোন মামলাও হয়নি। গেল পনের বছর খুনি হাসিনার লুটপাট বাহিনীর এই সদস্য নারায়ণগঞ্জ সড়ক জনপদ বিভাগে একক নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখে কোটি কোটি টাকার টেন্ডার বাগিয়ে নিয়েছেন। স্বৈরাচার হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর বিএনপির শিবিরে ঢুকে এখনো সড়ক ও জনপদ নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন। হাসমত আলী হাসুর বাড়ি সিদ্ধিরগঞ্জে মিজমিজ পশ্চিমপাড়া এলাকায়।

সড়ক ও জনপদ নারায়ণগঞ্জ শাখার কয়েকজন ঠিকাদারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, হাসমত আলী হাসু গেল পনের বছর সড়ক ও জনপদ বিভাগ নারায়ণগঞ্জে লুটতরাজ করেছেন। তার বাহিনীর অন্যতম সদস্য নারায়নগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের চার নাম্বার ওয়ার্ড কাউন্সিলর নুরুদ্দিন মিয়া, ছোট হযরত ও বড় হযরত সহ একটি শক্তিশালী বাহিনী বানিয়ে তিনি সড়ক ও জনপদ দখলে রেখেছিলেন। হাসুর ইশারা ছাড়া সড়ক ও জনপদ নারায়ণগঞ্জ শাখায় কিছুই হতো না। সামান্য ফাইল এক টেবিল থেকে অন্য টেবিলে গেলেও হাসুর নির্দেশ লাগতো।

কবির বকুল নামে শিমড়াইল এলাকার এক বাসিন্দা জানান, সড়ক ও জনপদ বিভাগে স্বৈরাচার খুনি হাসিনা সরকারের আমলে সকল কিছু নিয়ন্ত্রণ করতেন হাসু। সিন্ডিকেট করে সকল টেন্ডার বাগিয়ে নিতেন। ছাত্র-জনতার অভুত্থানে ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের শিমড়াইল মোড় থেকে সাইনবোর্ড পর্যন্ত ধ্বংযজ্ঞ কর্মকান্ড চালিয়েছেন হাসু বাহিনী। বহু ছাত্রজনতাকে গুলি করেছেন এই বাহিনীর সদস্যরা। তারপরও বিশেষ হাতের ইশারায় হাসুর নামে কোন মামলা হয়নি। তিনি রয়েছেন বহাল তবিয়তে।

খোঁজখবর নিয়ে জানাগেছে, হাসমত আলী হাসু পারিবারিক কয়েকজন বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত। তাই তাদের ক্ষমতায় হাসু সড়ক ও জনপদ বিভাগ নারায়নগঞ্জকে আগের মতোই রামরাজত্ব কায়েম করে চলেছেন। হাসুর মতব্রত নয় এমন কোন কাজ কেউ সড়ক বিভাগে করতে পারবে না এটা হাসু বাহিনীর সাফ কথা।

নারায়নগঞ্জে আলোচিত সেভেন মার্ডার মামলার অন্যতম আসামী ছিলেন হাসমত আলী হাসু। হত্যা মামলার পর বেশ কয়েক বছর এলাকা ছেড়ে পালিয়ে ছিলেন। পরে গডফাদার শামীম ওসমানের সাথে সখ্যতা গড়ে মোটা অংকের উৎকোচ দিয়ে এলাকায় ফিরে আসেন।

ফারজানা আক্তার নামে মিজমিজি পশ্চিমপাড়া এলাকার এক বাসিন্দা জানান,

গণঅভুত্থানে ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের শিমড়াইল মোড়ে ছাত্র জনতার উপর পুলিশী হামলা,গুলি ও হত্যার পিছনে হাসুর ব্যাপক ইন্ধন ছিলো। তারপরেও তার নামে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় কোন মামলা হয়নি। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, হাসু মোটা টাকার বিনিময়ে স্থানীয় বিএনপির সাথে মিশে গেছে। তার পারিবারিক লোকজনকে বিএনপির সাথে স¤পৃক্ত করেছেন। যে কারণে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার আমলে গণহত্যায় ইন্ধন ও অর্থায়ন করাসহ নানা অপকর্ম করার পরও হাসমত আলী হাসুর নামে মামলা হচ্ছে না। তিনি এলাকায় বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।

সেভেন মার্ডার মামলা অত্যতম আসামী হিসেবে আপনিও এলাকাছাড়া ছিলেন,বর্তমান পাঁচ আগস্টের পরও আপনার নামে কোন মামলা হয়নি কেন? বর্তমানে আপনি বিএনপির নেতাকর্মীদের নিয়ে সিন্ডিকেট করে আগের মতোই সড়ক ও জনপদে বহাল তবিয়তে রয়েছেন এমন প্রশ্নের জবাবে হাসমত আলী হাসু বলেন, টেন্ডার ইজিবিতে হয় আমার কোন হাত নেই। আমি সৌদি আরবে বসেও ইজিবির মাধ্যমে টেন্ডার পেয়েছি। তবে গণঅভুত্থানে ছাত্র-জনতার উপর হামলার ইন্ধিন ও অর্থায়নের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি তার কোন সদোত্তর দেননি।

নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার জানান, যারা গণঅভুত্থানে ছাত্রজনতাকে হত্যার নীল নকশা করেছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র‌্যাব-১১ এর অধিনায়ক তানভীর মাহমুদ পাশা জানান, অপরাধী যতই শক্তিশালী হউক না কেন। যতই খোলশ পাল্টায় না কেন তাদের কোন ছাড় নেই।

নারাণগঞ্জে সড়ক জনপদের ঠিকাদার হাসুন অজানা কাহিনী। পরবর্তী পর্বে আসছে..

More News...

খাঁটি আওয়ামীলীগার সামিউলের অঢেল সম্পদ

অবৈধ সম্পদে লালেলাল ইঞ্জিঃ জামাল