তরমুজ ও সাম্মাম বিক্রির পরে মুকডালের অপেক্ষায় রাঙ্গাবালীর কৃষকরা 

তরমুজ ও সাম্মাম বিক্রির পরে মুকডালের অপেক্ষায় রাঙ্গাবালীর কৃষকরা 

তরমুজ ও সাম্মাম বিক্রির পরে মুকডালের অপেক্ষায় রাঙ্গাবালীর কৃষকরা 

সাব্বির কাজী , রাঙ্গাবালী(পটুয়াখালী)

রাঙ্গাবালীতে মুগ ডালের বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রযুক্তি এবং কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে চলতি মৌসুমে ৩০০ হেক্টর জমিতে মুগ ডালের আবাদ বেশি হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।

রাঙ্গাবালীর কৃষকদের উৎপাদিত এসব মুগ ডাল এখন জেলার স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। এতে একদিকে যেমন ভালো দাম পাচ্ছেন চাষিরা, অন্যদিকে মুগ ডাল চাষে দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের।

এর ফলে কৃষকের মুখে হাসি ফুটে উঠেছে। প্রান্তিক চাষিদের মতে, সময়মতো কৃষি বিভাগ থেকে বীজ ও প্রশিক্ষণ সহায়তা পেলে ফলন আরো ভালো হতো। মাঠে চাষিদের মধ্য বেশিরভাগ নারী। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও কাজ করে যাচ্ছেন।

উৎপাদন ভালো এবং লাভ বেশি হওয়ায় নতুন নতুন কৃষি উদ্যোক্তারা আগ্রহী হচ্ছেন মুগ ডাল চাষে।

উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে ১ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। তবে আবাদ হয়েছে ১ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে।

এর মাধ্যমে প্রায় ৩০/৩৫ কোটি টাকার মুগ উৎপাদন হবে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ। রবি মৌসুমে পতিত থাকা জমিতে মুগ ডালের চাষ করছেন কৃষকরা। বিশেষ করে বারি মুগ-৬ ও বারি মুগ-১৪, বারি-৬ ও বারি-১৪ জাতের আবাদ সম্প্রসারণ বেশি হয়েছে এউপজেলায়। ফলন আসার পর ৩ ধাপে মুগ ডাল উত্তোলন করতে পারেন ডাল চাষিরা।

স্থানীয় কৃষক জানান, এ বছর মুগ ডালের ফলন ভালো হয়েছে। তবে কিছু যায়গায় অতিরিক্ত লবনের কারনে গাছ মারা গিয়েছে , সময়মতো কৃষি বিভাগ থেকে বীজ ও প্রশিক্ষণ সহায়তা পেয়েছেন তারা। উপকূলের উৎপাদিত এসব ডাল এখন উপজেলার চাহিদা মিটিয়ে চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। এতে একদিকে যেমন ভালো দাম পাচ্ছেন চাষিরা, অন্যদিকে মুগ ডাল চাষে দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে তাদের।

কয়েকজন মুগ ডাল চাষি বলেন, এ বছর মুগ ডাল চাষ লাভজনক হয়েছে। সেচ ও সার ছাড়াই ভালো ফলন পাওয়া যায়। মুগডাল চাষি ইমাম হোসেনের স্ত্রী নুপুর বেগম জানান, মূলত মুগডাল প্রক্রিয়াজাতকরণের বেশিরভাগ কাজ মহিলাদের করতে হয়। যেমন ক্ষেত থেকে তোলা, মাড়াইকরা, ঝারানো, শুকানোসহ সব কাজই মহিলাদের হাতে করতে হয়।

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, রবি মৌসুমে পতিত জমিতে মুগ ডাল চাষ করছেন কৃষক। ফলন আসার পর তিন ধাপে ডাল উত্তোলন করতে পারেন চাষিরা।

উপজেলার বড়বাইসদীয়া ইউনিয়নের কৃষক নিজাম হাওলাদার বলেন, তরমুজ ও সাম্মাম চাষ শেষ এখন মুগ ডাল নিয়ে ব্যাস্ত কৃষকরা এ বছর মুগ ডালের ফলন ভালো হয়েছে। আমি এক একর জমিতে ডাল আবাদ করেছি। সব খরচ বাদ দিয়ে প্রায় ৪০ হাজার টাকা লাভ থাকবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান জানান, আধুনিক জাতের মুগ ডাল চাষ এবং কৃষককে নিয়মিত পরামর্শ ও প্রযুক্তির ব্যবহারবিষয়ক প্রশিক্ষণ দিয়েছে কৃষি বিভাগ। এ কারণেই উপজেলায় মুগ ডালের আবাদ বেড়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও কৃষি বিভাগের পরামর্শে সঠিক পরিচর্যার কারণে ফলন ভালো হয়েছে। তৈরি হচ্ছে নতুন নতুন কৃষি উদ্যোক্তা, সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে কর্মসংস্থানের, যা গ্রামীণ অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।

তিনি বলেন, মুগ ডাল একটি সুস্বাদু ও ডালজাতীয় পুষ্টিকর ফসল এবং মুগের রয়েছে বহুমুখী ব্যবহার। বিশেষ করে মুগ যেমন ডাল হিসেবে খাওয়া হয়, তেমনি কিন্তু মুগের ডাল হিসেবে ভেজে বাজারজাত করা হয়। মুগ একটি লাভজনক ফসল, কারণ এতে সেচ ব্যবস্থা বেশি দরকার হয় না, এতে কম পরিমাণে সার দিতে হয়। মুগ রোপণে মাটির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি পায়।

More News...

চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা নিরসনে স্বেচ্ছাশ্রমে খাল খনন কার্যক্রমের দায়িত্ব হস্তান্তর

আইওয়াইসিএম লায়ন্স ইম্পেরিয়াল সিটি ও আদর্শ সমাজ কল্যাণ সংঘের যৌথ ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প, চক্ষু চিকিৎসা সেবা ও স্মরণ সভা