তারুণ্যের সমাবেশে সাংবাদিক লাঞ্চিতের অভিযোগ!
স ম জিয়াউর রহমান, চট্টগ্রাম থেকে :
চট্টগ্রামে বিএনপির সহযোগী সংগঠনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত ‘তারুণ্যের সমাবেশ’ নিয়ে সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। শৃঙ্খলার অভাব, কর্মরত ও মোজো সাংবাদিকদের সঙ্গে অশোভন আচরণের অভিযোগ ওঠেছে । স্লোগান ও জনস্রোতের চাপে মঞ্চের সামনের ব্যারিকেড ভেঙে পড়লে বিড়ম্বনায় পড়ে মহিলা দলের নেত্রীরা সমাবেশ ছাড়ে। এতে নেতাকর্মীদের হাতে সাংবাদকর্মীরাও অপমানজনক ও অশোভন আচরণের শিকার হন।
সরে জমিনে দেখা যায়, সমাবেশে মঞ্চের সামনে চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিএনপি ও জ্যেষ্ঠ নেতাদের জন্য নির্ধারিত আসন থাকা সত্বেও জ্যেষ্ঠ নেতারা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে শুনলেন বক্তব্য। মিছিল নিয়ে বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে আসা নেতাকর্মীরা মঞ্চের সামনে ভিড় করে চেয়ার সরিয়ে জায়গা দখল করে নেয়, ফলে জ্যেষ্ঠ নেতাদের দাঁড়িয়ে থেকে বক্তব্য শুনতে হয়। কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে আসা মহিলা নেত্রীরা নিরাপত্তাহীনতা ও বিড়ম্বনায় পড়ে মাঝপথেই সমাবেশ ত্যাগ করেন তারা।
সমাবেশ অনুষ্ঠানে উপস্থিত একাধিক জ্যেষ্ঠ নেতা স্বীকার করে বলেন, আয়োজক কমিটির কিছুটা শৃঙ্খলার ঘাটতি ছিলো।নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা বলেন, “শৃঙ্খলার ঘাটতি ছিল, তবে এটি নেতাদের অসম্মান নয়, বরং কিছুটা সাংগঠনিক ভুলের ফসল যা ভবিষ্যতের জন্য অশুভ লক্ষণ।”
এদিকে সমাবেশে সাংবাদকর্মীদের সঙ্গে ঘটে অপ্রীতিকর ঘটনা। দেশ রূপান্তর, খবরের কাগজ, বাংলানিউজ২৪, কালবেলাসহ একাধিক ফটো সাংবাদিকদের মঞ্চে থেকে ছবি তুলতে বাধা দেওয়া হয়। এমনকি কয়েকজন ফটো সাংবাদিকের গায়ে ধাক্কা দেয়ার মতো অশোভন আচরণ করতেও দেখা যায়।
মোজো সাংবাদিকদের মধ্যে আজকের পত্রিকা, সিএইচডি, কালের কণ্ঠ, বাংলাদেশ টাইমস, দৈনিক জনবানী, যায়যায়দিন, সিটিজি নিউজসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়। অনেককে ‘অনলাইন সাংবাদিক’ বা ‘মোবাইল সাংবাদিক’ বলে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে হেওপ্রতিপন্ন করা হয় ।
এই ধরনের অশোভন আচরণে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। তারা বলেন “এটা শুধু পেশাগত দায়িত্বে বাধা নয়, বরং সাংবাদিকতার প্রতি অশ্রদ্ধার বহিঃপ্রকাশ।”
দেশের প্রথম সারির পত্রিকা ও অনলাইন মাল্টিমিডিয়ার ফটো ও মোবাইল সাংবাদিকরা জানান, ছবি ও ভিডিও সংগ্রহে বাধার সম্মুখীন
হয়েছে। এমনকি মঞ্চে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা মোবাইল ফোনে ফুটেজ নিতে বাধা দেন এবং ‘মোবাইল সাংবাদিক’ বলে কটাক্ষ করেন।
একজন মোজো সাংবাদিক বলেন, “আমরা পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে হেনস্তার শিকার হয়েছি। আমাদের পেশাগত পরিচয় নিয়েই প্রশ্ন তোলা হয়েছে।”
চট্টগ্রামের স্থানীয় সাংবাদিকরা বিষয়টি নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, জাতীয় রাজনীতিক দলের এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ সমাবেশে সাংবাদিকদের প্রতি এমন আচরণ দুঃখজনক এবং অগ্রহণযোগ্য বলে মনে করেন তারা।