নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, শোষণ-বৈষম্যহীন সমাজ ও রাষ্ট্র গঠনে ফ্যাসিবাদবিরোধী সব রাজনৈতিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। বিনা কারণে নিজেদের মধ্যে কাদা ছোড়াছুড়ি করা যাবে না। স্বৈরাচার দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেলেও তাদের দোসররা এখনও দেশের সর্বত্র সক্রিয়। সুযোগ পেলেই তারা তাদের ফ্যাসিবাদী চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়ে দেশকে ফের অশান্ত করে তুলবে। শুক্রবার সকালে যশোর ঈদগাহে জেলা জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ক্ষমতায় যাওয়া আমাদের উদ্দেশ্য নয়, দেশে সুশাসন কায়েম করা আমাদের উদ্দেশ্য। আপনাদের মাধ্যমে দেশের মানুষের কাছে দুয়েকটি জিনিস চাই। আমরা যদি দেশের জন্য, মানুষের জন্য কাজ করি তা হলে আপনাদের অন্তরের ভালোবাসা চাই। আপনারা যেন আমাদের ভালোবাসা উপহার দেন। ভালোবাসার সঙ্গে সমর্থন ও সহযোগিতা চাই। সমর্থন ও সহযোগিতার পাশাপাশি জাতীয় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় যেন আপনাদের পাশে পাই। এই জাতিকে বদলে দেওয়ার জন্য আপনাদের অন্তরে একটা জায়গা চাই। এই জিনিসগুলো যদি দেশবাসী আমাদের উপহার দেয়, আমরা দেশবাসীর কাছে চিরকৃতজ্ঞ থাকব।
তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী দেশবাসীর সেবা করার সুযোগ পেলে এ দেশে চাঁদাবাজির অস্তিত্ব থাকবে না। দখলদারের অস্তিত্ব থাকবে না, ঘুষ থাকবে না। আমরা ফ্যাসিবাদ, সাম্রাজ্যবাদের প্রশ্রয় দেবে না-এমন জাতি গড়তে চাই। ৫ আগস্টের আগে দেশ দুঃশাসনে পরিপূর্ণ ছিল। আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় এসেছে তখন দুঃশাসন, জুলুম করেছে। বিগত সাড়ে ১৫ বছর আওয়ামী লীগের দুঃশাসন, জুলুমের কষ্ট বেশি ছিল। বাংলাদেশ ও বিশ্বের মানুষ কল্পনা করতে পারেনি ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট রেজিমের পতন হবে। ফ্যাসিস্ট পতনের এই অর্জনের নেতৃত্ব আমাদের সন্তানদের। তাদের কোটা আন্দোলন দমাতে ফ্যাসিস্ট সরকারের হাতুড়ি, হেলমেট বাহিনী গুলি চালিয়েছিল। আমাদের বীর সন্তানরা বিজয় ছিনিয়ে এনেছে। তাদের এই গৌরব অভিভাবক হিসেবে আমাদেরও।
যশোর জেলার উন্নয়ন বঞ্চনার চিত্র তুলে ধরে শফিকুর রহমান বলেন, ব্রিটিশ আমলের প্রাচীন জেলা যশোর। পুরোনো জেলা হিসেবে যশোরে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। যশোরবাসী ন্যায্য অধিকার বঞ্চিত হয়েছে। এই শহরকে কেন্দ্র করে প্রাণকেন্দ্র গড়ে তোলা দরকার। পার্ক নেই, মাঠ নেই, জলাধার নেই। উন্নয়নের কথা বলে ক্ষমতায় যাওয়ার আগে মানুষের পা ছুঁয়ে নেয়, ক্ষমতায় গেলে তারা ভুলে যায়। ভাবে পাঁচ বছর পর আবার পা ছুঁয়ে নিলে হয়ে যাবে। মাঝখানে তারা মানুষকে মনে রাখে না।
জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির অধ্যাপক গোলাম রসুলের সভাপতিত্বে কর্মী সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন, মুহাদ্দিস আবদুল খালেক, মাওলানা আজিজুর রহমান, ঝিনাইদহ জেলা আমির অধ্যাপক আলী আযম, সাতক্ষীরা জেলা আমির শহিদুল ইসলাম মুকুল, মাগুরা জেলা আমির এমবি বাকের, নড়াইল জেলা আমির আতাউর রহমান বাচ্চু প্রমুখ।