ফ্যাসিস্ট খুনি হাসিনার ক্যাডার মুহিদের ভুমিদস্যুতা বহাল রাখতে দুটি পত্রিকার ভরণপোষণ

ফ্যাসিস্ট খুনি হাসিনার ক্যাডার মুহিদের ভুমিদস্যুতা বহাল রাখতে দুটি পত্রিকার ভরণপোষণ

ফ্যাসিস্ট খুনি হাসিনার ক্যাডার মুহিদের ভুমিদস্যুতা বহাল রাখতে দুটি পত্রিকার ভরণপোষণ

স্টাফ রিপোর্টারঃ
আওয়ামী লীগ শাসনামলে ক্ষমতা আর পেশিশক্তি ব্যবহার করে পলাতক ফ্যাসিস্ট খুনি হাসিনা, রাষ্ট্রপতি শাহাবুদ্দিন চুপ্পু, উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, কাউয়ামন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, ইসকনমন্ত্রী দিপুমনি, গমচোর মন্ত্রী কামরুল ইসলাম, করনা ভেকসিন চোর দরবেশ এফ রহমান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাবেক বিচারপতি ফজলুল করিম, সাবেক বিচারপতি আমিরুল কবির চৌধুরী সহ শীর্ষ মন্ত্রী, এমপি, ডিসি-এসপি আমলা-কামলা, নেতা-পাতিনেতাদের বগলদাবা করে দুর্ধর্ষ ভুমিদস্যুতা চালিয়েছেন মুহিদুর রহমান মুহিদ। নিজের ভাই হাবিবুর রহমান হাবিবকে বানিয়েছেন সিলেট-৩ আসনের এমপি। মুহিদ রাজউকের পূর্বাচল এলাকায় প্রবাসী পল্লী আবাসনের ব্যানারে শতশত মানুষের ঘরবাড়ীসহ কৃষি জমি দখলে নিয়ে প্লট বানিজ্যের মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। পাচারকৃত টাকা দিয়ে দুবাই, ইংল্যান্ড, আমেরিকা, কানাডা, ভারত এর মতো আরো অনেক দেশে কোম্পানীর অফিস স্থাপন সহ গড়ে তুলেছেন সেকেন্ড হোম। ঢাকা, মুন্সীগঞ্জ, নারায়নগঞ্জ ও গাজীপুরে প্রবাসী পল্লী গ্রুপের সাইনবোর্ড টাঙ্গিয়ে সাধারন মানুষে জমিজমা কখনো নামমাত্র টাকায়, কখনো বা জোর করে লিখিয়ে নিয়েছেন। আবার অন্যের জমির উপরে কোম্পানীর লে-আউট ডিজাইনে হাজার হাজার প্লট দেখিয়ে বুকিং দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছেন কোটি কোটি টাকা।

তবে ৫ই আগষ্ট-২০২৪ ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট খুনী হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে ভারত চলে যায়। ক্ষমতা হারানোর পর হাসিনার এসব ভুমিদস্যু ক্যাডাররাও বেশির ভাগই এখন পলাতক। কেউ দেশের ভেতর আত্মগোপনে, কেউ বা আরব আমিরাত, কানাডা, আমেরিকা, ইংল্যান্ড, ভারত সহ বিভিন্ন দেশে। এই পলাতক ভুমিদস্যুদের অনেকেই এখন নিজেদের নামে-বেনামের জমিজমা যে যেভাবে পারছেন বিক্রি করে দিচ্ছেন। আর এই কাজে তাদেরকে সহযোগিতা করছেন নতুন করে গজেউঠা একধরনের দালাল সিন্ডিকেট। প্রবাসী পল্লী গ্রুপের রক্ষাকবচ হিসেবে শেল্টার দিচ্ছেন দুটি জাতীয় দৈনিক প্রত্রিকা। একটি দৈনিক নতুন সময় ও অন্যটি দৈনিক দেশবার্তা। প্রবাসী পল্লী গ্রুপের চেয়ারম্যান মুহিদের ভুমিদস্যুতায় অবৈধ উপায়ে অর্জিত অর্থেই পরিচালিত হচ্ছে এই পত্রিকা দুটি।

অনুসন্ধানে জানা যায়, রাজধানী ঢাকার রাজউক-পূর্বাচল নতুন শহর এলাকায় গড়ে উঠা প্রবাসী পল্লী গ্রুপের নামে রয়েছে ভুমিদস্যুতার অসংখ্য অভিযোগ। রাষ্ট্রীয় অনুমোদনহীন প্রবাসী পল্লী গ্রুপের চেয়ারম্যান মুহিদুর রহমান মুহিদের সাথে ছিল ফ্যাসিস্ট সরকারের ঘনিষ্টতা। খুণী হাসিনার বোন শেখ রেহানাকে ম্যানেজ করে মুহিদ তার ভাই হাবিবুর রহমান হাবিবকে সিলেট-৩ আসনের এমপি বানিয়েছিলেন। মুহিদ ছিলেন ২০২১ সালে তাঁতী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক । শেখ রেহানার কয়েকজন ক্যাশিয়ারের অন্যতম একজন মুহিদুর রহমান মুহিদ। আবাসন ব্যবসার আড়ালে প্রবাসী পল্লী গ্রুপ ফ্যাসিস্টদের কালো টাকা নিরাপদে রাখার গোপন চুক্তিতেও কাজ করেছে।

অভিযোগ আছে, আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতার কালো টাকা বিনিয়োগ হয়েছে প্রবাসী পল্লী গ্রুপে। খাল, বিল, নীচু জমি, জলাশয় ভরাট এবং ফসলি জমি সহ সরকারি খাস জমি দখলের অভিযোগ আছে এই প্রবাসী পল্লী গ্রুপের বিরুদ্ধে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রবাসী পল্লী মিডিয়া গ্রুপ নিয়ে রয়েছে নানান অভিযোগ। মিডিয়া গ্রুপ থেকে দৈনিক নতুন সময় ও দৈনিক দেশবার্তা নামে দুটি পত্রিকা প্রকাশিত হয়। দৈনিক নতুন সময় পত্রিকার সম্পাদক নাজমুল হক শ্যামল দৈনিক আমাদের সময় পত্রিকার সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খানের ঘনিষ্ট অনুসারী ছিলেন। এই পত্রিকা এখনো ফ্যাসীবাদের পক্ষ নিয়ে কাজ করছে। তাদের পত্রিকায় নিউজের ধরন দেখলেই তা অনুভব করা সম্ভব।
দৈনিক দেশবার্তার দায়িত্বে আছেন তোফায়েল আহমেদ, তিনি আবার দৈনিক নতুন সময় পত্রিকার প্রকাশকও, প্রবাসী পল্লীর চেয়ারম্যান মুহিদের নিকট আত্মীয় না হলেও নিজ এলাকার বিশ্বস্ত লোক হওয়ায় প্রবাসী পল্লী মিডিয়া গ্রুপের দায়িত্ব পেয়েছেন।

প্রবাসী পল্লী গ্রুপের চেয়ারম্যান মুহিদুর রহমান মুহিদের সাথে সাবেক সেনাপ্রধান আজিজের সাথে ছিলো ভালো সম্পর্ক। তার ক্ষমতা ব্যবহার করে সাধারণ মানুষের জমিজমা সহ সরকারী জমি কজ্বা করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সাধারন মানুষের জমিতে বানানো এসব প্লট এখন চওড়া দামে বিক্রি করে দেশের বাইরে টাকা পাচার করছেন গ্রুপটি।

প্রবাসী পল্লী গ্রুপের পূর্বাচল প্রকল্পে জমি নিয়ে চলছিলো বিরোধ, বুদ্ধি খাটিয়ে মিডিয়া গ্রুপের কর্মীদের নিয়ে পিকনিকের নামে তাদের বাহিনী হিসেবে উপস্থাপন করেন। কিন্তু কর্মীরা এটা জানতেন না যে তাদেরকে ঢাল বানিয়ে এসব অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে প্রবাসী পল্লী গ্রুপ।

এব্যাপারে দৈনিক নতুন সময় পত্রিকার প্রকাশক-সম্পাদক এবং দৈনিক দেশবার্তার পত্রিকার সম্পাদক তোফায়েল আহমেদ বলেন, প্রবাসী পল্লী গ্রুপের অর্থায়নে এই পত্রিকা দুটি কাজ করছে এটা ঠিক আছে।