মানিকগঞ্জে ইউনিয়ন ভুমি নায়েব আলিমের সম্পদের পাহাড়
স্টাফ রিপোর্টার:
ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারী কর্মকর্তা বা নায়েব আব্দুল আলিম দেওয়ান। চাকুরীতে পদবী নিচের দিকে হলেও সম্পদ অর্জনের ক্ষেত্রে বড় বড় কর্মকর্তাদের কাছাকাছি। গ্রামের বাড়ী মানিকগঞ্জ, রাজধানী ঢাকা ও কেনারীগঞ্জের ৯টি হোল্ডিংয়ে তার অর্জিত অন্তত পঁচিশ কোটি টাকার সম্পদের তথ্যপ্রমান পাওয়া গেছে। যা রীতিমতো স্থানীয় এলাকাবাসীর মধ্যে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। এই কর্মকর্তা ছোট একটি পদে চাকুরী করে কিভাবে এই বিশাল সম্পদের মালিক হলেন তা নিয়ে এবারের এই প্রতিবেদন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, মানিকগঞ্জের হরিরামপুর আজিমনগর ইউনিয়নের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা (নায়েব) আব্দুল আলিমের বিরুদ্ধে যতো সম্পদ অর্জনের তথ্যপ্রমান পাওয়া গেছে তার মধ্যে নিম্নবর্নিত হোল্ডিং গুলোতে জমি ও বসতবাড়ী মিলে অন্তত ২০/২৫ কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে।
মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক মৌজাস্থ হোল্ডিং-১২৮৩, হোল্ডিং- ৯১৪, হোল্ডিং-১০৫২, হোল্ডিং-১৫০৫, দিয়াবাড়ী মৌজাস্থ হোল্ডিং-১১৪৬, মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার নারাঙ্গাই মৌজাস্থ হোল্ডিং ১০১৯, গিলন্ড মৌজাস্থ হোল্ডিং- ৬২৮, বেউথা মৌজাস্থ হোল্ডিং- ১৫৮০, ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলাধীন গদার বাগ মৌজাস্থ হোল্ডিং-২১২০। এছাড়া ঢাকায় দুটি ফ্ল্যাট ও নামে-বেনামে বিভিন্ন একাউন্টে বিপুল পরিমানে নগদ অর্থও রয়েছে বলে জানিয়েছে স্থাণীয়রা।
আব্দুল আলিম হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক গ্রামের লাল মিয়ার ছেলে। ২০২৮ সালের ৩০ডিসেম্বর চাকুরীর মেয়াদ শেষ হবে। বর্তমানে তিনি মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার আজিমনগর ইউনিয়নের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা (নায়েব) এর দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছেন।
সুত্র জানায়, ওই কর্মকর্তা মূলত ভূমি সংক্রান্ত বিভিন্ন সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে অবৈধ অর্থ আদায়, জমির শ্রেণী পরিবর্তন, সরকারি খাস জমি আত্মসাৎ এবং নামজারি ও জমা খারিজের মতো কাজে ঘুষ গ্রহণ করে এই বিপুল পরিমাণ সম্পদ গড়ে তুলেছেন।
স্থানীয় জনসাধারণ এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ এবং তারা চায় দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক। একই সাথে, দুদক যেন তাদের অভিযান আরও জোরদার করে এবং ভূমি অফিসগুলোকে দুর্নীতিমুক্ত করে, সেই প্রত্যাশাও তাদের রয়েছে।
স্থাণীয়রা বলেন, ভূমি কর্মকর্তার এই সম্পদের পাহাড় কেবল একটি দুর্নীতির চিত্র নয়, এটি আমাদের সামগ্রিক ব্যবস্থার দুর্বলতাও তুলে ধরে। এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার হবে এবং ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিবেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
এব্যাপারে ভুমি সহকারী কর্মকর্তা আব্দুল আলিম দেওয়ান এই প্রতিবেদককে বলেন, স্বামী-স্ত্রী দুজনেই চাকুরী করে এসব সম্পদ অর্জন করেছি, পৈত্রিক সুত্রে প্রাপ্ত সম্পদও রয়েছে। পরিবার পরিজনর নিয়ে খুবই কষ্ঠে জীবন যাপন করছি। আপনি আমাকে বিরক্ত করতেছেন, আমি আপনার নাম্বার ট্রাকিংয়ে পাঠাচ্ছি, এন্টিকরাপশনে আমার লোক আছে। আপনাকে দেখে নেবো।