মির্জাপুরে নিজের বিয়ে ভাঙতে গিয়ে গণধোলাইয়ের শিকার ছাত্রলীগ নেতা
মো. শান্ত হোসেন, টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধি:
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে নিজের বিয়ে ভাঙতে গিয়ে গণধোলাইয়ে শিকার হয়েছন শরীফ মাহমুদ সান নামে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের এক নেতা। পরে বিয়ের শেরওয়ানী খুলে আগুনে পুড়ে এবং ক্ষতিপূরণ বাবদ ব্যাংকের চেক মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পান ওই ছাত্রলীগ নেতা। বুধবার বিকালে উপজেলার বাশতৈল ইউনিয়নের কটামারা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা শরীফ মাহমুদ সান উপজেলার উত্তর পেকুয়া গ্রামের সাইফুল ইসলামের ছেলে। সে উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক কমিটির সদস্য বলে জানা গেছে। বৃহস্পতিবার সন্ধায় বিষয়টি নিশ্চিত করেন বাঁশতৈল ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম ।
জানা গেছে, ছাত্রলীগ নেতা শরীফ মাহমুদ সানের সঙ্গে কটামারা গ্রামের একটি মেয়ের এক বছর আগে পারিবারিকভাবে বিয়ের সিদ্ধান্ত হয়। দুই পরিবারের সিদ্ধান্তে বিয়ে রেজিষ্ট্রিও হয়। কিন্ত অপর একটি মেয়ের সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতা শরীফ মাহমুদ সানের প্রেমের সম্পর্ক থাকায় সে পারিবারিকভাবে সিদ্ধান্তে বিয়ে হওয়া মেয়ে বিয়ে না করতে নানভাবে টালবাহানা করতে থাকে। একপর্যায় বুধবার (২ এপ্রিল) শরীফের বিয়ের দিন ধার্য হয়। সে গোপনে বিয়ে ভাঙার ফন্দি করে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী দুপুরে বরযাত্রী কনের বাড়িতে যায়। খাওয়া-দাওয়া শেষে শরীফ মাহমুদ সান মোবাইল ফোনে কাকে যেন বলে খাওয়া শেষ প্রশাসনের লোকজন আসেনা কেন? কনে পক্ষের এক লোক সানের একথা শুনে ফেলে বাড়ির লোকজনকে জানান। পরে বিষয়টি নিয়ে বিয়ে বাড়িতে হৈচৈ পড়ে যায়। স্থানীয় লোকজন বরসহ কয়েকজনকে গণধোলাই দিয়ে আটকে রাখে এবং বরের পড়নের শেরওয়ানী খুলে আগুনে পুড়ে ফেলে ক্ষোভ প্রকাশ করে।
পরে স্থানীয় মাতাব্বর এবং দুই পক্ষের লোকজন সন্ধায় বিষয়টি নিয়ে সালিশে বসেন। সালিশে আলোচনা সাপেক্ষে দুই পক্ষই বিয়ে না হওয়ার ব্যাপারে একমত হন। বিয়ের দেনমোহর ও খোরপশ বাবদ কনেকে ৯ লাখ টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এজন্য ১৮ লাখ টাকার একটি চেকে শরীফের বাবা সাইফুল ইসলামের স্বাক্ষর রাখা হয়। ৯ লাখ টাকা দেওয়ার পর ওই চেক ফেরত দেওয়া হবে বলে জানা গেছে। পরে মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পান ছাত্রলীগ নোত শরীফ মাহমুদ সান।কনের বাবা বলেন, আমার মেয়ের সাথে যে ঘটনা হয়েছে তাতে আমরা খুবই মর্মাহত। এমন ঘটনা যাতে আর কারো সঙ্গে ঘটে না।
বাঁশতৈল ইউপি সদস্য বাবুল হোসেন খানের সাথে কথা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ছাত্রলীগ নেতা নিজের বিয়ে ভাঙতে গিয়ে এ ধরনর পরিস্থিতির সৃষ্টি করেন। স্থানীয়রা দুই পক্ষ নিয়ে সালিশি বৈঠকের মাধ্যমে বর পক্ষকে ৯ লাখ জরিমানা করে। পরে মুচলেকা দিয়ে মুক্তি পায় ছাত্রলীগ নেতা।