রাজউকের পিয়ন কালামের ১২০বিঘা জমি: ২টি হায়েস-৩টি বাস: ছিলো চায়ের দোকান

রাজউকের পিয়ন কালামের ১২০বিঘা জমি: ২টি হায়েস-৩টি বাস: ছিলো চায়ের দোকান

রাজউকের পিয়ন কালামের ১২০বিঘা জমি: ২টি হায়েস-৩টি বাস: ছিলো চায়ের দোকান

স্টাফ রিপোর্টারঃ
কালাম, রাজধানীর কাপ্তান বাজারে ফুটপাতের চায়ের দোকান ছেড়ে রাজউকের পিয়ন পদে চাকুরীতে যোগদান করেন। ২০০৮ সালে খুনী হাসিনা রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসার পরে গোপালী পরিচয়ে কালাম হয়ে উঠেন আবুল কালাম সিকদার। মুজিব পরিবারে মাফিয়া শেখ সেলিমের সান্নিধ্যে কালাম রাজউকের শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নকে কব্জা করে রাতারাতি বনে যান কোটিপতি। পূর্বাচলে রাজউকের প্লট বাগিয়ে নেন। গ্রামের বাড়ী টুঙ্গিপাড়ার গজালিয়াতে কিনেন ১২০ বিঘা জমি, ৩টি বাস-২টি হায়েস গাড়ী কিনে শুরু করেন পরিবহন ব্যবসা। ঢাকায় রয়েছে ২টি ফ্ল্যাট। কোটি টাকা খরচ করে ছোট ভাইকে বানিয়েছেন ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার। আর কি লাগে। এদিকে টুঙ্গিপাড়ার কন্যা দেশের প্রধানমন্ত্রী। ঢাকার শহরে কারো সাথে কথা বলার আগেই বলতেন আমার বাড়ী গোপালগঞ্জ।

টুঙ্গিপাড়া থানাধীন গজালিয়া গ্রামের বাসিন্দা কালাম শিকদার খুনী হাসিনার স্বৈরাচারী শাসনামলে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)কে বাপ-দাদার পৈত্তিক সম্পদে পরিনত করে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করেন। রাজউকের শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নকে গোপালগঞ্জের পাওয়ারে জিম্মি করে নিয়োগ বানিজ্য, বদলি বানিজ্য, নকশা বানিজ্য, ফাইলে গায়েব সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রন সহ শ্রমিকলীগ সংগঠনের নামে চাঁদা আদায়ের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেন। গ্রামে বাড়ীতে ক্রয় করেন শত বিঘা জমি।

সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া থানাধীন গজালিয়া গ্রামের অধিবাসী রতন শিকদারের ছেলে কালাম শিকদার। গত ১৫ বছর আগে ঢাকায় আসেন ভাগ্য পরিবর্তন করতে। ঢাকার কাপ্তান বাজার এলাকায় চা বিক্রির কাজ শুরু করেন। ভাগ্য গুণে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) এর চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী হিসেবে চাকরি পাওয়ার পরে চা বিক্রেতা থেকে বনে যান রাজউক কর্মচারী। তারপর থেকেই দ্রুত ঘুরতে থাকে তার ভাগ্যের চাকা। রাজউকের চাকরি যেন আলাউদ্দিনের আশ্চর্য প্রদীপের মতো তাকে বিপুল অর্থবিত্তের মালিক বানিয়ে দেয়। রাজউকের একজন সাধারন চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী কালাম শিকদারের এমন উত্থানে হতবাক তার এলাকাবাসী।

টুঙ্গিপাড়া গজালিয়া, ডুমুরতলা, বাঁশুরিয়া, হিন্দু পাড়া ও মুন্সির চর এলাকার মৌজা গুলোতে তার নামে-বেনামে ১২০ বিঘা অধিক কেনা জমি রয়েছে বলে জানায় স্থানীয়রা। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ২০/২৫ কোটি টাকা। গ্রামের বাড়ি গজালিয়াতে রয়েছে দুই তলা বিশিষ্ট ভবন। রাজধানী ঢাকায় রয়েছে দুই-দুটি ফ্ল্যাট ও দুটি হায়েস গাড়ী, ৩টি বাস। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ১.৫ কোটি টাকা। তার বিভিন্ন ব্যাংক একাউন্টে রয়েছে নগদ অর্থ।

অনুসন্ধানে জানা যায়, কালাম শিকদার ঢাকা মহানগর জাতীয় শ্রমিক লীগের রাজনৈতিক পরিচয় বহন করেন। সাধারণত দুর্নীতি ঢাকতে তার এই রাজনৈতিক পদচারণা। চাকুরীর আগে কালাম শিকদারের পরিবারে এতো সম্পত্তি ছিলো না। গজালিয়া, ডুমুরতলা, বাঁশুরিয়া, হিন্দু পাড়া ও মুন্সির চর এলাকায় মৌজা গুলোতে তিনি ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে কেনা জমির খতিয়ান গুলো পরীক্ষা নিরীক্ষা করলেই তো সত্যতা বেরিয়ে আসবে। তার কি পরিমান সম্পদ আছে যেকোন গোয়েন্দা সংস্থার বের করা দুইদিনের কাজ। স্থানীয়দের অনেকেই বলছে, কালামের বেশীভাগ জমিই তার ভাই মনির মেম্বারের নামে রেজিষ্ট্রিশন করা। তাহলে মনির মেম্বারই বা এতো সম্পদের মালিক হলেন কিভাবে। ১৫/২০ বছর আগেও তাদের নুন আনতে পান্তা ফুরানোর অবস্থা ছিলো। কোটি টাকা খরচ করে মনির মেম্বার নির্বাচিত হয়েছিলেন। স্থানীয়রা জানায়, মনিরের মেম্বার হওয়ার পেছনে পুরো টাকাটাই কালাম খরচ করেছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কর্তৃক যথাযথ অনুসন্ধান করলেই থলের বিড়াল বের হয়ে আসবে বলে মনে করেন স্থানীয়রা।
এব্যাপারে কালাম সিকদার বলেন, পূর্বাচলে যে প্লট পেয়েছি, তা বিক্রি করে গ্রামে জমি কিনেছি। এতে সমস্যার কি আছে। আমার সব সম্পদ ইনকাম ট্যাক্সে দেয়া আছে।