শ্রীনগরে পরিকল্পিত ছিনতাইয়ের শিকার ডেনমার্ক প্রবাসী সেলিম

শ্রীনগরে পরিকল্পিত ছিনতাইয়ের শিকার ডেনমার্ক প্রবাসী সেলিম

শ্রীনগরে পরিকল্পিত ছিনতাইয়ের শিকার ডেনমার্ক প্রবাসী সেলিম

স্টাফ রিপোর্টারঃ
মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলায় কোরবানীর গরুর হাটে ডেনমার্ক প্রবাসী সেলিম নামের এক যুবককে ছুরিকাঘাত করে নগদ ৫লাখ টাকা, স্বর্নের চেইন, ব্যাংক কার্ড, প্রবাসী ড্রাইভিং লাইসেন্স সহ গুরুত্বপূর্ন কাগজপত্র ছিনতাই করে নিয়ে গেছে ছিনতাইকারী সেন্টু মোড়ল ও তার বাহিনীর সদস্যরা। ৩জুন-২০২৫ তারিখ সন্ধ্যা ৬ ঘটিকায় উপজেলার দেউলভোগ গরুর হাটে এঘটনা ঘটে। এঘটনায় শ্রীনগর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হলেও মামলা নিচ্ছে না থানা পুলিশ। ছিনতাইকারী সেন্টু মোড়ল পশ্চিম দেউলভোগের জনু মোড়লের ছেলে এবং কাশেম পূর্ব বেজগাঁও মৃত হাজী মুনছুর আলী মৃধার ছেলে।

স্থানীয় এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগি সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার দেউলভোগ দয়াহাটা গ্রামের মরহুম আব্দুর রহমানে ছেলে ডেনমার্ক প্রবাসী মোঃ সেলিম প্রঃ মাসাম বিল্লাল (৪০) কোরবানীর ঈদের ছুটি কাটাতে সম্প্রতি দেশে এসেছেন। কোরবানীর গরু কেনার জন্য আপন বড় মোঃ নজরুর ইসলাম বাদলের সাথে ওই দিন গরুর হাটে যান। হাটে গিয়ে গরু দেখার সময় ছিনতাইকারী সেন্টু মোড়ল ও তার বাহিনীর সদস্যরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে প্রবাসী সেলিমকে টার্গেট করেন। ছিনতাইকারী কাশেম মৃধা প্রবাসী সেলিমের ভাই বাদলকে পেছনে থেকে সজোরে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেন। ফলে সেলিম ও কাশেমের মধ্যে বাকবিতন্ডতা শুরু হলে পাশে থাকা ছিনতাইকারী সেন্টু মোড়ল সহ অজ্ঞাতনামা আরো ৪/৫ জন ছিনতাইকারী মিলে সেলিম ও তার ভাই বাদলকে মারতে মারতে হাটের বাইরে নিয়ে আসেন। এসময় ছিনতাইকারীরা ধারালো ছুরি দিয়ে সেলিমকে মাথায় ও কোমরে আঘাত করে তার সাথে থাকা নগদ ৫ লাখ টাকা, গলায় থাকা ১ভরি ওজনের স্বর্নের চেইন ও মানিব্যাগে ব্যাংক কার্ড, ভিসা কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স সহ গুরুত্বপূর্ন ডুকমেন্টস গুলো ছিনিয়ে নিয়ে যায়। ছুরিকাঘাতে গুরুত্বর আহত সেলিমকে তার ভাই বাদল ও স্থানীয়রা মিলে চিকিৎসার জন্য পার্শ্ববর্তী উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স হাসপাতালে নিয়ে নিয়ে গেলে কতর্ব্যরত ডাক্তাররা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতালে প্রেরণ করেন।

স্থানীয় এলাকাবাসী জানায়, সেন্টু ও তার বাহিনী লোকেরা বিগত ১৫ বছর আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে সরাসরি জড়িত ছিলো। এখন তারা বিএনপির রাজণীতির সাথে মিশে গেছে। এরা এলাকায় ভয়ংকর সব অপরাধের সাথে জড়িত। চরি, ডাকাতি ছিনতাই, জমিদখল ও সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে মানুষের ধনসম্পদ লুটে নেয়াই তাদের প্রধান কাজ। বিগত ১৫ বছরে এরা আওয়ামীলীগের ব্যানারে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। এখন বিএনপির লেবাস ধারন করেছে। এদের বাপ আওয়ামীলীগ হলে, চাচায় বিএনপি। এরা একটি বড় সিন্ডিকেট। স্থানীয় রাজনীতি এই বাহিনীর হাতে বন্দি। মেম্বার-চেয়ারম্যান, নেতা-খেতা সবই এই ডাকাতের গ্রুপ । এদের ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করে না। এই ছেলেটার বিদেশে কষ্ঠার্জিত টাকা এভাবে ছিনতাই করে নিয়ে গেল। অথচ এই ছেলেটা ছিনতাইকারীদের গডফাদারদের চাপপ্রয়োগের কারনে আইনের আশ্রয়টুকু নিতে পারবে না। থানা পুলিশ তো ছিনতাইকারীদের গডফাদারদের রাজনৈতিক বলয়ের মধ্যে জিম্মি। কারন থানা থেকে ২০গজ দুরে ছিনতাই ও হত্যার উদ্দেশ্যে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এঘটনায় অভিযোগ ছাড়াই পুলিশ আসামী ধরা কথা অথচ ঘটনার ১দিন পেরিয়ে গেছে, অভিযোগ দেয়ার পরেও পুলিশ আসামী ধরছে না এমনকি মামলাও নিচ্ছে না। গুণজন উঠেছে, আওয়ামীলীগ নেতার ভাই বিএনপির এক বড় নেতা ইতিমধ্যে থানা পুলিশ মামলা নিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। বিষয়টা নাকি তারাই দেখবেন।

গুরুত্বর আহত ভুক্তভোগি প্রবাসী সেলিম হাসপাতালের বেডে শুয়ে বলেন, আমি বিদেশ থেকে টাকা-পয়সা নিয়ে এসেছি, এটা ওরা আগে থেকেই টার্গেটে রেখেছে। গরুহাটের উছিলায় অহেতুক পায়ে পাড়া দিয়ে ঝগড়া বাধিয়ে আমার সব কিছু ছিনতাই করে নিয়ে গেছে। আলহামদুল্লিাহ, আল্লাহ আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। মানিব্যাগের কাগজপত্র গুলো না পেলে আমার অনেক ক্ষীত হয়ে যাবে।

এব্যাপারে শ্রীনগর থানা ওসি শাকিল আহমেদ বলেন, দুই পক্ষের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি থেকে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। দুই পক্ষই অভিযোগ দিয়েছে, তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।