রাজউকের অভিযান মানেই ঘুষের কারবার: সাংবাদিক দেখলেই অসুস্থ্য হয়ে পড়েন রাজউকের পরিচালক রাজিয়া সুলতানা
স্টাফ রিপোর্টারঃ
রাজউকের অভিযান মানেই ঘুষের কারবার। সাংবাদিক দেখলেই অসুস্থ্য হয়ে পড়েন ঘুষের রানী রাজউক জোন-৭ এর পরিচালক রাজিয়া সুলতানা। সরকারের লাখ লাখ টাকা খরচ করে অভিযান অভিযান নাটক প্রদর্শন করে ভবন মালিককে নিজের টেবিলে ডেকে আনেন। আর হাতিয়ে নেন লাখ লাখ টাকার ঘুষ। কোটি টাকার বাড়ী রক্ষা করতে লাখ লাখ টাকা অনায়াশেই ঘুষ দিয়ে থাকেন ভবন মালিকেরা। এভাবেই ঘুষের রানী রাজিয়া সুলতানা দলবল নিয়ে অভিযান নাটক পরিচালনা করে কেরানীগঞ্জের একটি ভবন মালিকের নিকট থেকে মোটা অংকের টাকা ঘুষ নিয়েছেন বলে দৃশ্যমান হয়ে উঠেছে। মোটা অংকের টাকায় রাজউকের লোকজনকে ম্যানেজ করে নেয়ার কথা ভবন মালিকও গর্বের সাথেই প্রচার করে আসছেন। কারন দুই দুই বার অভিযান পরিচালনা করে ভবন মালিকের একটা চুলও ছিড়তে পারে নাই রাজউক কর্তৃপক্ষ।
রাজধানী শহরে বাড়ী নির্মান করতে হলে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ রাজউকের অনুমোদন নেয়া বাধ্যতামুলক। অনুমোদন ছাড়া যেকোন ভবন নির্মান হলে তা অবৈধ বলে চিহ্নিত হয়। পরবর্তীতে রাজউক কর্তৃপক্ষ অভিযান পরিচালনা করে অবৈধ ভবন ভেঙ্গে ফেলেন এবং ভবন মালিককে মোটা অংকের অর্থ জরিমানা করে থাকেন। যেকারনে অবৈধ উপায়ে নির্মিত অসংখ্য ভবনের বিরুদ্ধে রাজউক আইনে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগিরা। কিন্তু রাজউকের একশ্রেনীর অসৎ কর্মকর্তারা ঘুষের বিনিময়ে নেই অভিযোগের ফাইল অন্ধকারে ফেলে রেখে অভিযোগকারীকে হয়রানী করতে করতে বারোটা বাজিয়ে দেন। দিনের পর দিন অপেক্ষা আর রাজউকে আসা-যাওয়া করতে করতে একসময় ক্লান্ত হয়ে প্রতিকারের আশাই ছেড়ে দেন ভুক্তভোগিরা। অভিযোগ দেয়ার দুই/তিন বছরেও কোন প্রতিকার মেলে না। আর এমন একটি অভিযোগের অন্তরালে রাজউক জোন-৭ এর পরিচালক রাজিয়া সুলতানা ও তার সিন্ডিকেট ভবন মালিকের নিকট থেকে মোটা অংকের টাকা ঘুষ আদায় করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, রাজউকের অনুমোদন ছাড়া ভবন নির্মানের শুরুতে রাজউকের চেয়ারম্যান বরাবর অভিযোগ দায়ের করেন রাজউক জোন-৭/৩ এর অধীনে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ হাসনাবাদ এলাকার বাসিন্দা ওয়াহিদুজ্জামান। অভিযোগের আলোকে বিগত ১বছরেও কোন কার্যকর ভুমিকা পালন করেনি রাজউক কর্তৃপক্ষ। তবে মাঝে দুটি অভিযান নাটক পরিচালনা করেছে ঘুষের রানী পরিচালক রাজিয়া সুলতানা।
অভিযোগের ভিত্তিতে দায়িত্ব পায় রাজউক জোন-৭/৩ এর ইমারত পরিদর্শক জয়নাল আবেদীন। কিন্তু তিনি মোটা অংকের ঘুষের বিনিময়ে রাজউকের অনুমোদনবিহীন ঐভবনটি নির্মানের সুযোগ করে দেন। ইমারত পরিদর্শক জয়নাল দীর্ঘ ৬ মাস অভিযোগকারীকে নানা টালবাহানায় ঘুরাতে ঘুরাতে ভবনটির নির্মান কাজ ৪র্থ তলায় সম্পন্ন করেন।
এঘটনায় সংবাদ মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে প্রশ্নের সম্মূখীন হয় জোন-৭/৩ এর অথোরাইজড অফিসার সাইদা ইসলাম। পরবর্তীতে তিনি জয়নালকে সহ আরেকজনকে নিয়ে অভিযান পরিচালনা করে ঐ ভবনের বিদ্যুতের মিটার খুলে নিয়ে আসেন। এতে ভবন মালিক তেমন একটা গুরুত্ব না দেয়ার ৬ মাস পরে এসে ঘুষের রানী পরিচালক রাজিয়া সুলতানার নেতৃত্বে পুলিশ প্রটেকশন সহ ৭০/৮০ জন লোক নিয়ে অভিযান পরিচালনা করে অবৈধ ভবনের এক কর্নার থেকে ৮/১০টি ইট ভেঙ্গে অভিযান সমাপ্ত করেন। ভবন মালিককে রাজউক অফিসে গিয়ে দেখা করার নির্দেশনা দেন। ভবন মালিক ফজলুল হক সুদনও রাজউকে গিয়ে দেখা করেন। ফিরে এসে তার বাড়ীর নির্মান কাজ শেষ পর্যায়ে চলমান রেখেছেন।
রাজউক জোন-৭/৩ এর অধীনে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ হাসনাবাদ এলাকার বাসিন্দা অভিযোগকারী ওয়াহিদুজ্জামান অহিদ মিয়া বলেন, প্রথম অভিযানে এসেছিলো ৩জন, পরের বারে এসেছিলো ৭০/৮০ জনের মতো। কিন্তু তারা কি কাজ করেছে কিছু বুঝতে পারছি না।
রাজউকের অনুমোদন ছাড়া ভবন নির্মানের বিষয়ে ভবন মালিক ফজলুল হক সুদন বলেন, রাজউককে কিভাবে ম্যানেজ করা লাগে আমার ভালো ভাবেই জানা আছে। আপনার কি সমস্যা, আপনে কিসের সাংবাদিক।
এবিষয়ে বিস্তারিত জানতে পরিচালক রাজিয়া সুলতানা দরবারে হাজির হলে তিনি সাংবাদিক দেখা মাত্রই অসুস্থ্য হয়ে পড়েন। তার পিয়ন জাহিদ নিজেকে দৈনিক মাতৃভুমির খবর পত্রিকার সাংবাদিক পরিচয়ে বলেন, ম্যাডাম অসুস্থ্য এখন কথা বলবে না।