ভোক্তা পর্যায়ে সার ও তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) সহনীয় পর্যায়ে রাখতে আমদানিতে জোর দিচ্ছে বর্তমান সরকার। এরই মধ্যে ১ লাখ ৩০ হাজার টন সার এবং এক কার্গো এলএনজি কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এসব প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়। সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, ১ লাখ ৩০ হাজার টন সারের মধ্যে ৬০ হাজার টন ইউরিয়া, ৩০ হাজার টন এমওপি এবং ডিএপি সার রয়েছে। এতে মোট ব্যয় হবে ৬৩৪ কোটি ৩২ লাখ ১২ হাজার টাকা। এ ছাড়া এলএনজি আমদানিতে প্রতি এককের দাম ১৪.৬৯০০ মার্কিন ডলার হিসেবে এক কার্গো এলএনজি কেনায় ব্যয় হবে ৬৯২ কোটি ৯৯ লাখ ১৯ হাজার ৩৬০ টাকা। ফলে সার ও এলএনজি আমদানিতে সরকারের মোট খরচ হবে ১ হাজার ৩২৬ কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে জন্য রাশিয়া, সৌদি আরব, মরক্কো এবং দেশীয় প্রতিষ্ঠান কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো) থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টন সার কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ অর্থবছরের জন্য সৌদি আরবের কৃষি পুষ্টি কোম্পানি (সাবিক) থেকে ১৪তম লটের ৩০ হাজার টন বাল্ক গ্র্যানুলার (অপশনাল) ইউরিয়া সার আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১২৫ কোটি ৮৮ লাখ ১২ হাজার টাকা। প্রতি টন সারের দাম পড়বে ৩৪৯ দশমিক ৬৭ মার্কিন ডলার।
কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড বাংলাদেশের কাছ থেকে দশম লটে ৩০ হাজার টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার ক্রয়ের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১২৩ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। প্রতি টন সারের দাম পড়বে ৩৪৩ দশমিক ২৫ মার্কিন ডলার।
রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে রাশিয়ার প্রোডিন্টরগ ও বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন- বিএডিসির মধ্যে স্বাক্ষর হওয়া চুক্তির আওতায় ষষ্ঠ লটের ৩০ হাজার টন এমওপি সার আমদানির প্রস্তাব অনুমোদনে ব্যয় হবে ১০৪ কোটি ৩১ লাখ টাকা। প্রতি টন সারের দাম পড়বে ৪৮৯ দশমিক ৭৫ মার্কিন ডলার।
রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে মরক্কো ওসিপি নিউট্রিক্রপস এবং বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের মধ্যে হওয়া চুক্তির আওতায় দশম (ঐচ্ছিক-প্রথম) লটের ৪০ হাজার টন ডিএপি সার আমদানিতে প্রস্তাব অনুমোদনে খরচ হবে ২৮০ কোটি ৫৬ হাজার টাকা। প্রতি টন সারের দাম পড়বে ৫৮৪ দশমিক ৫০ মার্কিন ডলার।
জ্বালানি চাহিদা মেটাতে আগামী ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসের জন্য আরও এক কার্গো তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানি করবে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ। আন্তর্জাতিক কোটেশনে অংশ নিয়ে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে কোরিয়ার পসকো ইন্টারন্যাশনাল করপোরেশন এই এক কার্গো এলএনজি সরবরাহ করবে। এক কার্গো এলএনজি ক্রয়ে ব্যয় হবে ৬৯২ কোটি ৯৯ লাখ ১৯ হাজার ৩৬০ টাকা।