হাতিয়ায় বিদ্যুৎ প্রকল্প : ৩০কোটি টাকার সুইচিং স্টেশনের বাস্তবে অস্তিত্বহীন : পর্ব-১

হাতিয়ায় বিদ্যুৎ প্রকল্প : ৩০কোটি টাকার সুইচিং স্টেশনের বাস্তবে অস্তিত্বহীন : পর্ব-১

বিশেষ প্রতিনিধিঃ
হাতিয়া,কুতুবদিয়া ও নিঝুমদ্বীপে শতভাগ বিদ্যুতায়নে ৬৫০কোটি টাকার বরাদ্দ নিয়ে কাজ শুরু করা প্রকল্পে সুইচিং স্টেশন নির্মান করা হলে বাস্তবে এটার অস্তিত্বই খুজে পাওয়া যায় না। অথচ ৩০কোটি টাকায় সুইচিং স্টেশন নির্মানের গল্পটা ভালোভাবেই লিপিবদ্ধ রয়েছে প্রকল্পের খাতাপত্রে। ফ্যাসিস্ট হাসিনার লুটপাটের অংশীদার প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মো: ফারুক আহমেদ এবং নির্বাহী প্রকৌশলী রায়হান এভাবেই এগিয়ে নিচ্ছে প্রকল্পের কাজ। হালকা বাতাসেই ভেঙ্গে পড়ে বিদ্যুতের খুটি। তবে হাসিনার গনেশ উল্টে যাওয়ায় হাতিয়ার এক ছাত্র সমন্বয়কের শেল্টারে উঠেছে হাসিনার চুরির পার্টনার প্রকৌশলী মো: ফারুক আহমেদ। এই প্রকল্প থেকে হাসিনাই শতকোটি টাকা কমিশন নিয়েছে বলে নিশ্চিত করেন প্রকল্প সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা বলেন, মেগা প্রকল্প গুলো মেগা দুর্নীতি হয়েছে, ৬৫০ কোটি টাকা প্রকল্পে বড়জোড় ২শ কোটি টাকার কাজ হয়েছে। বাকী টাকা হাসিনা ও তার চোরেরা ভাগ-বাটোয়ারা করে নিয়েছে। হাসিনাকে কোটি কোটি টাকা ঘুষ না দিলে দামী পদের চাকুরিই মিলতো না কারো কপালে। প্রকৌশলী মো: ফারুক আহমেদ প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্ব পেতে কোটি কোটি ঘুষ দিয়েছে লুটেরা হাসিনাকে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে হাতিয়া,কুতুবদিয়া ও নিঝুমদ্বীপে শতভাগ বিদ্যুতায়নে ৬৫০কোটি টাকার বরাদ্দ নিয়ে কাজ শুরু করেন প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মো: ফারুক আহমেদ এবং নির্বাহী প্রকৌশলী রায়হান। কোন কোন ক্ষেত্রে কাজের অর্ধেকের অস্তিত্বও খুজে পাওয়া যায় না। আবার কাজ হলেও নিম্নমানের নির্মান সামগ্রী ব্যবহারের কারনে উদ্ভোধনের আগেই অবকাঠামো ভেঙ্গে পড়তে দেখা গেছে। প্রকল্পে কর্মরত কর্মকর্তারা নির্দিষ্টহারে কমিশন কেটে রেখে ঠিকাদারকে কাজের বিল পরিশোধ করে। যার একচুল ব্যতিক্রম ঘটেনি প্রকৌশলী মো: ফারুক আহমেদ ক্ষেত্রে। অভিযোগ রয়েছে, তিনি মোট বরাদ্দের ৯% টাকা কমিশনের মালিক। অর্থ ভাগ-বাটোয়ারার কারনে প্রকল্পটি পুরোপুরি চালু হওয়ার আগেই ভেঙ্গে পড়েছে বিদ্যুতের খুটি। সরেজমিনে তদন্ত করলে এমন চিত্র দেখা যাবে। অফিসের খাতাপত্র নাড়াচাড়া করলে এসব লুটপাটের চিত্র ধরা পড়বে না। চুরি ধরতে হলে সরেজমিনে গিয়ে কাজের বাস্তব চিত্র পর্যবেক্ষন করতে হবে। জিনিসপত্রের বাজার দর যাচাই-বাছাই করলে দেখা যাবে ১ টাকার জিনিস ১২ টাকায় কেনা হয়েছে, তারপরেও সেগুলো অকেজো। সুত্র জানায় ৩০ কোটি টাকা খরচ করে এই প্রকল্পে একটি সুইচিং স্টেশন নির্মান করার কথা থাকলেও বাস্তবে কয়েকটি বিদ্যুতের খুটি ও বাউন্ডারি দেয়াল ছাড়া কিছুই খুজে পাওয়া যায় না। মেশিনারিজ বলতে কিছুই নাই। লুটপাটের দৃশ্য দেখলে চোখ কপালে উঠে যাবে।

সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, প্রকল্পের প্রারম্ভিক মেয়াদ ২০২৩ সালে থেকে বাড়িয়ে ২০২৫ সাল এবং নির্মান ব্যয় ৩৮৪ কোটি ৩৬ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৬৪৭ কোটি ১২ লাখ টাকা করা হয়। প্রকল্পের আওতায় ৪টি ৩৩/১১কেভি উপকেন্দ্র নির্মাণ (হাতিয়া দ্বীপে ৩টি ও কুতুবদিয়া দ্বীপে ১টি), মুকতারিয়া-নিঝুমদ্বীপে সংযোগ খালে দেড় কিলোমিটার ১১কেভি সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপন, কুতুবদিয়া চ্যানেলে ৫ কিলোমিটার ডাবল সার্কিট ৩৩কেভি সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপন, ১হাজার ৪৮৬ কিলোমিটার বিতরণ লাইন নির্মাণ, সুইচিং স্টেশন স্থাপন, ৩৫কিলোমিটার বিতরণ লাইন রেনোভেশন, ৩হাজার ২৫০টি পোল মাউন্টেড স্থাপন সহ অফিস ভবন, রেস্ট হাউজ, ডরমিটরি, সীমানা দেয়াল ইত্যাদি নির্মানের সুনির্দিষ্ট উল্লেখ রয়েছে। এর মধ্যে ৭০শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে দাবী করা হচ্ছে। কিন্তু বাস্তব চিত্র দেখলে বুঝা যায় লুটপাটের চিত্রটা কতটা ভয়াবহ। হাতিয়া, নিঝুম দ্বীপ ও জাহাজমারা ঘাটের উভয় পাশের সুইচিং স্টেশনের মেশিনগুলো অকেজো হয়ে পড়ে আছে। বিদ্যুৎ বিতরনের খুটি ভেঙ্গে মাটিতে পড়ে গেছে। ১৩০কোটি টাকা ব্যয়ে ৭কিলোমিটারে স্থাপনকৃত সাবমেরিন ক্যাবলস গুলো খুবই নিম্নমানের হওয়া অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে। অথচ এগুলো ৫গুণ বেশী দামে কেনা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা নিশ্চিত করেন।
এব্যাপারে পিডি ফারুক আহমেদ বলেন, আমার প্রকল্পে কোন অনিয়ম হয় নাই। ভালোভাবে জেনে শোনে নিউজ করেন।

More News...

খাঁটি আওয়ামীলীগার সামিউলের অঢেল সম্পদ

অবৈধ সম্পদে লালেলাল ইঞ্জিঃ জামাল