মুরাদ হোসেন মুসাঃ
আমি জয়বাংলার লোক, আমি গোপালগঞ্জের লোক, আমি বঙ্গবুন্ধর বদনা এগিয়ে দিসি, আমি শেখ হাসিনা মায়রে স্বপনে দেখেছি এমন সব কথা বলে বলে বিগত ১৫ বছর খুনী হাসিনার দিকনির্দেশনায় একেকজন আওয়ামীলীগের লোকেরা পাবলিক টয়লেট থেকে রাষ্ট্রপতির দপ্তর পর্যন্ত একেক ধরনের সিস্টেমে এদেশের টাকা লুটপাট করে গড়ে তোলেছেন সম্পদের পাহাড়। লুটপাটের টাকা বড় চোরেরা বিদেশে পাচার করলে দুই টাকার জাহাঙ্গীরের মতো ছোট চোরেরা দেশেই আছেন বহাল তবিয়তে। রাজধানীর মোহাম্মদপুর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের অফিস সহায়ক জাহাঙ্গীর আলমের বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন তথ্য প্রমান অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে। ২০বছরের চাকুরী জীবনে বেতন পেয়েছেন সব মিলিয়ে ৪৫/৫০লাখ টাকা। অথচ যাত্রাবাড়ীর কাজলাএলাকায় ৪কোটি টাকা মূল্যে ৬কাঠার একটি প্লট কিনেছেন মাত্র কিছুদিন আগে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, জাহাঙ্গীর আলম ২০০২ সালে নিবন্ধন অধিদপ্তরের অধীন চাকুরী শুরু করেন। ২০বছর চাকুরী করে বেতন পেয়েছে ৪৫থেকে ৫০লক্ষ টাকা। কিন্তু গত ১০ বছরে তার সম্পদ বেড়েছে ৩০০ গুণেরও বেশি। জাহাঙ্গীর আলম দীর্ঘদিন সূত্রাপুর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে ছিলেন। শোনা যায় ২০২৪ সালে তিনি ৩০লক্ষ টাকা ঘুষের বিনিময়ে মোহাম্মদপুর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে বদলি হয়ে যোগদান করেন। সাব-রেজিষ্টার ও বিভিন্ন ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানের মাঝে ঘুষ লেনদেনের নির্ভরযোগ্য হাত হলেন অফিস সহায়ক জাহাঙ্গীর। জমিরমূল্য কম দেখিয়ে সরকারী রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে জমি রেজিষ্ট্রিশন করা সাবরেজিষ্টার ও জমি গ্রহীতার মধ্যে একমাত্র হাত হলো সাব-রেজিষ্টারের অফিস সহায়ক । কারন একটা জমি রেজিষ্ট্রিশন হওয়ার পূর্বে ইহার কাগজপত্র সব কিছু পঙ্খানুপঙ্খভাবে যাচাই বাছাই করেন অফিস সহায়ক। আর জাহাঙ্গীর এই সুযোগে যত ধরনের ফন্দি ফিকির করেন থাকেন। যেমন ১কোটি টাকা জমির দলিলমূল্য হলে রেজিষ্ট্রি ফি আসে ১১ পার্সেন্ট অর্থাৎ ১১ লাখ টাকা। যেকারনে দলিল গ্রহীতাও লাভ অনুসারে মোটা অংকের ঘুষ দিয়ে দলিলমূল্য কম দেখিয়ে দলিল রেজিষ্ট্রিশন করে থাকেন। এক্ষেত্রে সরকার রাজম্ব হারালেও জাহাঙ্গীরেরা কোটিপতি বনে যায় বিনাশ্রমে।
সুত্র জানায়, জাহাঙ্গীর এভাবে ঘুষ দুর্নীতি ও অনিয়মের টাকা দিয়ে পশ্চিম যাত্রাবাড়ী হ্যাপী টাওয়ারের ২কোটি টাকা দিয়ে কিনেছেন ৩টি ফ্লাট, যাত্রাবাড়ীর কাজলা এলাকায় ৪কোটি টাকা দিয়ে ৬ কাঠার একটি প্লট কিনেছেন বেশ কিছুদিন আগে। ঘুষের টাকায় ডেমরা মৌজায় ২কোটি টাকা দিয়ে কিনেছেন ৫ কাঠার প্লট, গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর দক্ষিণ বহরি এলাকায় কিনেছেন ৮০শতক জমি, ২৫ শতক জমির উপর ৪ তলা ফাউন্ডেশনে করেছেন আলিশান ১তলা বাড়ি। এখানে তিনি খরচ করেছেন ১০ থেকে ১২ কোটি টাকা। দুর্নীতি ও ঘুষের টাকায় একজন অফিস সহায়ক কিভাবে অর্ধশত কোটি টাকার মালিক হলেন, এ নিয়ে বিভিন্ন পত্রপত্রিকা, টেলিভিশনে সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পরেও দুর্নীতি দমন কমিশন দুদক কেন তদন্ত করেনি। কথিত আছে হাসিনার যুগে দুদক ছিলো আপাদমস্তক দুর্নীতিতে নিমজ্জিত। দুদকের প্রতি সব সময়ই এমন ক্ষোভ প্রকাশ করেন সাধারণ জনতা।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমি এত সম্পদের মালিক নই, আপনি প্রমাণ করতে পারলে সব সম্পদ আপনাকে দিয়ে দিব। আপনার যা মনে চায় লিখে দেন।