মোঃ মুরাদ হোসেন মুসাঃ
বাংলাদেশ রোড-ট্রান্সপোর্ট অথরিটি বিআরটিয়ের উপ-পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার জামাল উদ্দিন সম্পদ অর্জনের ক্ষেত্রে আলাদিনের দৈত্যকেও হার মানিয়ে দিয়েছেন। রূপকথা গল্পে আলাদিনে চেরাগে ঘষা দিলেই দৈত্য বেরিয়ে বলতো হুকুম করুন মালিক কি লাগবে। রাজপ্রাসাদ চাইলে রাজপ্রাসাদই বানিয়ে দিতো চোখের পলকে। ইঞ্জিনিয়ার জামাল উদ্দিনের কাছে এমন দৈত্য না থাকলেও ছোট খাটো চাকুরী দিয়েই বানিয়েছেন কোটি কোটি টাকার বাড়ী গাড়ী জমিজমা সহ ব্যাংক ব্যালেন্স। তার সম্পদের ফিরিস্তি দেখলে যে কারোই চোখ কপালে উঠে যাবে, ১০একর জমি, বিলাশ বহুল ফ্ল্যাট, দামী গাড়ী, সুন্দরী নারী কি নেই তার। সরকারী চাকুরী করে নিজে ৬০/৬৫ হাজার টাকা বেতন পেলেও নিজের প্রাইভেট গাড়ীর ড্রাইভারই পালেন ৪৫ হাজার টাকায়। পরিবার পরিজনের ভরন পোষনে মাসে খরচ করেন লক্ষাধিক টাকা। বিলাশবহুল রাজকীয় জীবন ধারনে এতো টাকা কোথা থেকে আসে এমন প্রশ্নে উত্তর খুজতেই বেরিয়ে আসে থলের বিড়াল। অনুসন্ধানে উঠে আসে শুধু বিলাশী জীবন ধরনই নয়, গড়েছেন সম্পদের পাহাড়।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, বিআরটিয়ের উপ-পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার জামাল উদ্দিনের গ্রামের বাড়ী পাবনা সদর উপজেলার খাকড়া গ্রামে। তিনি কিয়াম উদ্দিন বিশ্বাস ও আজিজা খাতুনের সন্তান। তিনি ১৯৯১ সালে সরকারী চাকুরীতে যোগদান করেন। চাকুরীতে তার আইডি নাম্বার-১৯৯১২০০০১২। তিনি বর্তমানে রাজধানীর লালমাটিয়া এলাকার সি-ব্লকের ৭/৫ নাম্বার বাসার বি-৪ নাম্বার ফ্ল্যাটে পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করেন। ৫হাজার ২শ স্কয়ার ফিটের এই ফ্ল্যাটটির বর্তমান বাজার মুল্য সাড়ে ৫ থেকে ৬ কোটি টাকা। রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট জোয়ার শাহারা মৌজার ১৮৫/১৪৭ নাম্বার জোতে জমি পরিমান ৮.২৫ শতাংশ, যার বর্তমান বাজার মুল্য ১০কোটি টাকা। মিরপুরের আগুন্দা মৌজার ৪৫/০২ নাম্বার জোতে জমির পরিমান ৭.৪৩ শতাংশ। যার বর্তমান মূল্য ৮/১০ কোটি টাকা। মোহাম্মাদপুরের লালমাটিয়া আবাসিক এলাকায় ৫২/৭ নাম্বার জোতে জমির পরিমান ০.৮৩ অজুতাংশ।পাবনা সদরের পাঁচ বাড়িয়া মৌজায় ৬২৯ নাম্বার জোতে জমির পরিমান-৪৯.৪৬৬ শতাংশ। যার বর্তমান মূল্য ১৫ কোটি টাকা। পাবনা সদরের বেজপাড়া মৌজায় ৫০৭ নাম্বার জোতে জমির পরিমান ২০ শতাংশ। পাবনা সদরের খোকড়া মৌজায় ৫৭০ নাম্বার জোতে জমির পরিমান ১ একর এবং ৩৬১ নাম্বার জোতে জমির পরিমান ৪ একর ৫ শতাংশ। পাবনা সদরের পাঁচ বাড়িয়া মৌজায় ৪৬৫ নাম্বার জোতে জমির পরিমান ৯১ শতাংশ। পাবনা সদরের চরমান্দপুর মৌজায় ৫৭৬ নাম্বার জোতে জমির পরিমান ২৫ শতাংশ। পাবনা সদরের দুরগারাপুর মৌজায় ১৩৪ নাম্বার জোতে জমি পরিমান ১৫ শতাংশ। পাবনা সদরের তলবপুর মৌজায় ১৫৪ নাম্বার জোতে জমির পরিমান ১একর ৪৯.২৫ শতাংশ। পাবনা সদরের বড় দিকশাইল মৌজায় ৯০০ নাম্বার জোতে জমির পরিমান ২ একর। উল্লেখিত এসব জমির বাজার মূল্য শত কোটি টাকার উপরে। এছাড়া বেগম পাড়ায় বাড়ী, বিভিন্ন ব্যাংকে কোটি কোটি টাকার আমানত, স্বর্নালংকার ও অন্যান্য জিনিস পত্র মিলে আরো শতকোটি টাকার সম্পদ রয়েছে বলে বিশ্বস্ত সুত্র জানিয়েছে। যা পরবর্তী চলমান অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসবে।
সুত্র আরো জানায়, ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে চাকুরী থেকে অবসর নেয়া ইঞ্জিনিয়ার জামাল উদ্দিন রাষ্ট্রপতি শাহাবুদ্দিন চুপ্পুর খুবই আস্থাভাজন ব্যক্তি। শাহাবুদ্দিন চুপ্পু রাষ্ট্রপতি হওয়ার আগেই ইঞ্জিনিয়ার জামাল উদ্দিন তার আর্শীবাদ গ্রহন করে দুর্নীতিতে বেপরোয়া হয়ে উঠে। জয় বাংলা শ্লোগান দিয়ে বিআরটিয়ের অফিসে একক রাজত্ব কায়েম করেছিলেন। খুণী হাসিনার দোসরেরা সরকারী অফিস গুলোকে বাপের সম্পদ মনে করতেন। ১ টাকার জিনিস কিনে ১০০ টাকা বাউচার করতো। প্রকল্পে বরাদ্দের টাকা ৭০ ভাগই লুটপাট করে নিয়ে গেছেন। চোরেরা প্রকাশ্যে চুরি করেছে। পাবলিক সেবার নামে ঘুষের হাট বসিয়ে ছিলেন। ১যুগ পেরিয়ে গেলেও কেউ কারোর বিরুদ্ধে বিচার করতো না। জনগন শুধু তদন্ত নাটক দেখেছে। আবার এক চোরে আরেক চোরের বিচারই বা কিভাবে করবে। সব চোরেরা মিলেই তো রাতের বেলা ভোট চুরি করে খুনী হাসিনারে ক্ষমতায় বসিয়েছে। এই চোরেরাই ডামি স্বামী নির্বাচন করে দিয়েছে। একারনে মহাচোর খুনী হাসিনার পিয়নের কাছেও ৪শ কোটি টাকা পাওয়া গেছে।
এব্যাপারে ইঞ্জিনিয়ার জামাল উদ্দিনের কাছে জানতে চেয়ে তার মোবাইল ফোনে কল দিলে তিনি রিসিভ করে সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার ফোনে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।