নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী মে-জুন মাসের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন (ইসি) পরিপূর্ণভাবে প্রস্তুত হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠকের পরে এ কথা বলেন তিনি। বিকাল সাড়ে তিনটায় নজরুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এমএম নাসির উদ্দিনসহ কমিশনারগণের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। প্রায় সাড়ে ৪টা পর্যন্ত বৈঠকের পর বিএনপির নেতৃবৃন্দ সভা কক্ষে বেরিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
নজরুল বলেন, আমরা তাদের কাছে মূলত তারা এই মুহুর্তে কি কার্য্ক্রম করছেন, জাতীয় নির্বাচনের বিষয়ে তাদের প্রস্তুতি কি এই বিষয়গুলো নিয়েই আমরা নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আমরা মতবিনিময় করেছি। সব কিছু আলাপের পর আমাদের কাছে মনে হয়েছে তাদের কথায় যে, আগামী মে মাস-জনু মাসের মধ্যে তারা পরিপূর্ণভাবে প্রস্তুত হবেন ভোটার তালিকা আপগ্রেড করে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, তবে এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা এখন তাদের নাই। কারণ দেশের প্রচলিত সংবিধান ও আইন হলো; একটা সরকার পদত্যাগ করলে তার ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন হওয়ার কথা। কিন্তু এখন তো ওই আইনে দেশ চলছে না, তাই না। এই মুহুর্তে তাহলে পলিটিক্যাল কনসেনসাসের ভিত্তিতে সরকারের তরফ থেকে অনুরোধ হতে হবে এবং তার ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন নির্বাচন অনুষ্ঠান করবেন। তবে আমরা এতোটুকু বুঝেছি যে, যদি মে-জুন মাসের মধ্যে পূর্ণ প্রস্তুতি থাকে তাহলে প্রাসঙ্গিক আর কোনো সমস্যা থাকলে সেটা দূর করে খুব দ্রুতই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব।
আলোচনার বিষয়বস্তু তুলে ধরে নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমরা নির্বাচন কমিশনের কাছে জেনেছি যে, তারা তাদের কমিশনের পক্ষ থেকে একটা কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন তারা কবে কি করবেন। এটা খালি তাদের বলা না, এটা দেশের সংবিধান অনুযায়ী প্রচলিত আইন অনুযায়ী কিছু বিধান আছে যে, জানুয়ারির ২ তারিখের মধ্যে অটোআপগ্রেড হওয়ার কথা এবং মার্চের ২ তারিখে এসে এটা চূড়ান্ত হওয়ার কথা। তাদের কাছ থেকে যেটুকু জানলাম যে, প্রায় ৩০ লক্ষ নতুন ভোটার আগামী দিনে যুক্ত হবে যেগুলো বাদ পড়েছিলো। তাদেরকে ভোটার আগে করা হয় নাই। আর এই সময়ে নতুন ভোটার যারা হবেন সেগুলো এখন ভোটার হবেন না। তারা ১৮ বছর হবেন আগামী বছরের পহেলা জানুয়ারি; কাজেই ওটা হিসেবে না। হিসাব হলো বাদ পড়া ছিলো প্রায় ৩০ লক্ষ ভোটার তালিকায় তারা যুক্ত হবেন। আর এর মধ্যে ১৫ লক্ষ মারা গেছেন তারাও বাদ পড়বেন। আল্টিমেটলি ১৫ লক্ষ ভোটার বিদ্যমান তালিকায় যুক্ত হওয়ার কথা।
কবে নাগাদ নির্বাচন হতে পারে এর কোনো আভাষ পাওয়া গেছে কিনা প্রশ্ন করা হলে নজরুল ইসলাম খান বলেন, না। আমি তো বললাম, নির্বাচনের ঘোষণা তো উনারা করতে পারেন না। কারণ সংবিধানের নরমান নিয়ম অনুযায়ী সেই নির্বাচন হচ্ছে না। যেহেতু নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার দায়িত্ব এখন সরকারের… তারপরে সিডিউল ঘোষণা তো কমিশনই করবে। আপনারা জানেন যে, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আগামীকাল আমাদের আলোচনা আছে সেখানে আমরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব।
সংস্কার কমিশনের সুপারিশ প্রসঙ্গে নজরুল ইসলাম খান বলেন, সংস্কার কমিশনের সুপারিশ নিয়ে সরকার স্টেকহোল্ডারদের সাথে আলোচনা করবে, সেটা করে যদি সিদ্ধান্ত আলোকে আইনের পরিবর্তন হয় বা বিধানের পরিবর্তন হয় তাহলে সেটা নির্বাচন কমিশনকে মানতে হবে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার এএম এম নাসির উদ্দিনের সাথে বৈঠকে ছিলেন নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, আবদুর রহমানেল মাসুদ, বেগম তহমিদা আহমদ এবং অবসরারপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।
বৈঠকে নজরুল ইসলাম খানের সাথে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ ও সেলিমা রহমান ছিলেন। নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদও ছিলেন এই বৈঠকে।