সাজাপ্রাপ্ত আসামী সরকারী চাকুরীতে বহাল
স্টাফ রিপোর্টারঃ
বাংলাদেশ সরকারী চাকুরী আইন-২০১৮ এর ৪২(১) অনুযায়ী কোন সরকারী কর্মচারী ফৌজধারী মামলায় আদালত কর্তৃক মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত বা ১ বছরের অধিক মেয়াদের কারাদন্ডে দন্ডিত হলে উক্ত রায়ের আদেশ প্রদানের তারিখ হইতে চাকুরী থেকে বরখাস্ত করার নির্দেশ দেয়া আছে। কিন্তু ডাঃ মুদ্দাচ্ছির রহমানের ক্ষেত্রে ঘটেছে উল্টো ঘটনা। তাকে চাকুরী থেকে বরখাস্ত তো দুরের কথা, তাকে উল্টো প্রমোশন দেয়া হয়েছে। আর এসবের পেছনে রয়েছে মোটা অংকের ঘুষ বানিজ্য। কর্তৃপক্ষের কাছে একাধিবার লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোন প্রতিকার পায়নি সংশ্লিষ্ট ভুক্তভোগি।
তথ্যপ্রমানে জানা গেছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনস্ত কর্মকর্তা ডাঃ মুদ্দাচ্ছির রহমান, কোড নম্বর-১৩৪৬৮৯, পোস্ট আইডি নম্বর-৩২৫৭৮, বিএমডিসি রেজিস্ট্রেশন নম্বর-৬০৫৪৯, বিসিএস ব্যাচ-৩৩ ফৌজধারী মামলায় একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামি। তার ২য় স্ত্রী ১৬মে-২০২২ তারিখে বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল নম্বর-৮ এ. নারী ও শিশু নির্য়াতন মামলা নম্বর-১৭৩/২২, ধারা-১১ অনুযায়ী একটি মামলা করেন। বিজ্ঞ আদালত সাক্ষ্য ও তথ্য প্রমানের ভিত্তিতে ১৭অগাস্ট ২০২২ তারিখে বিচারিকি রায় প্রদান করেন। এতে ডাঃ মুদ্দাচ্ছির রহমানকে ২বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ১ লক্ষ টাকা জরিমানা অনাদায়ে তিন মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। এসময় ডাঃ মুদ্দাচ্ছির রহমান ঢাকা মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন।
সুত্র জানায়, ডাঃ মুদ্দাচ্ছির রহমান খুনি হাসিনার ডাক্তার সিন্ডিকেটের সক্রিয় সদস্য হওয়ায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালিক মোটা অংকের ঘুষ গ্রহন করে আদালতের এই রায়কে ফাইল বন্ধি করে ডাস্টবিনে ফেলেদেন। যেকারনে ডাঃ মুদ্দাচ্ছির রহমানকে চাকুরী থেকে বরখাস্ত তো দুরের কথা, কেউ তার একটা পশম ছিড়তে পারে নাই। বুক ফুলিয়ে চাকুরী করেছেন, নিয়েছেন সব ধরনের সুযোগ সুবিধা। ৫ আগষ্ট খুনি হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পরে ডাঃ মুদ্দাচ্ছির রহমান কিছু দিন চুপচাপ ছিলেন। তিনি বর্তমানে দিনাজপুরের আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ এ কর্মরত আছেন। শোনা যাচ্ছে, সম্প্রতি তিনি অন্তবর্তী সরকারের কাছ থেকে প্রমোশনও বাগিয়ে নিছেন। অথচ ৪জুলাই-২০২৪ তারিখে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের সচিব বরবার লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছিলেন ডাঃ মুদ্দাচ্ছির রহমানের ২য় স্ত্রী ফাতেমা তালুকদার।
এদিকে বাংলাদেশ সরকারি চাকরি আইন ২০১৮ এর ৪২(১) ধারা অনুযায়ী, কোন সরকারি কর্মচারী ফৌজদারী মামলায় আদালত কর্তৃক মৃত্যুদন্ড বা ১ বছরের অধিক মেয়াদের কারাদন্ডে দণ্ডিত হলে, উক্ত রায়ের আদেশ প্রদানের তারিখ থেকে সরকারী চাকুরি থেকে তাৎক্ষণিক বরখাস্ত করতে নির্দেশ দেয়া আছে। অথচ এতো দিনেও কোন আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করেনি স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়।
ভুক্তভোগি ফাতেমা তালুকদার বলেন, স্বশরীরে উপস্থিত থেকে ৫ বার মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন দপ্তরে আদালতের রায়ের কপি সহ লিখিত অভিযোগ করেছি। সকল সম্মানিত কর্মকর্তাদের কাছ থেকে মৌখিক ভাবে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি পেলেও বাস্তবে তার কোন প্রয়োগ বা বিচার পাইনি। ডাঃ মুদাচ্ছির রহমানের দ্বারা নির্যাতন ও লাঞ্ছনার যে করুন পরিণতির শিকার হয়েছি, তারচেয়েও বেশী হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে।