কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি: ঢাকার কেরানীগঞ্জে বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার দ্রুত আরোগ্য কামনায় একই স্থানে কর্মসূচি আয়োজনের অনুমতির জন্য বিএনপি ও যুবদলের দুটি পক্ষ আবেদন করেছে। একাধিক পক্ষের একই স্থানে আবেদন করার ঘটনায় স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে চাপা উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। প্রাথমিকভাবে পুলিশ ভিন্ন দুটি স্থানে অনুষ্ঠান আয়োজনের পরামর্শ দিয়েছে। তবে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ঘিরে সংঘাতের আশঙ্কায় কঠোর অবস্থান নিয়েছে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, একপক্ষের নেতৃত্বে রয়েছেন যুবদলের কেন্দ্রীয় সিনিয়র সহসভাপতি হাজি রেজাউল কবীর পল। তিনি আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে ঢাকা-৩ আসনের ধানের শীষের মনোনয়নপ্রত্যাশী। অপর পক্ষের নেতৃত্বে আছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের পুত্রবধূ ও দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা বিএনপির সভাপতি নিপুণ রায় চৌধুরী।এদিকে কর্মসূচি ঘোষণার পর থেকে রেজাউল কবীর পল ও নিপুণ রায় চৌধুরীর সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।
রেজাউল কবীর পলের অফিস সেক্রেটারি মো. তারিফুর রহমান বলেন, ২২ আগস্ট বিকেলে আমাদের পক্ষ থেকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়া ও মিলাদের জন্য আয়োজন করা হয়েছে। সেদিন সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত উক্ত কর্মসূচির জন্য ঈদগাহ মাঠ ব্যবহারের জন্য আবেদন করা হয়েছে। সেই প্রেক্ষিতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এ অনুষ্ঠানের বিষয়ে গত মঙ্গলবার আমরা জিনজিরা ঈদগাহ মাঠ পরিচালনা কমিটির সভাপতি, ঢাকা জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও কেরানীগঞ্জ মডেল থানাকে লিখিতভাবে অবহিত করেছি।
তিনি আরও বলেন, আমরা মাঠের অনুমতি চাওয়ার পরও কেন ওইদিন একই জায়গায় দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা বিএনপির সভাপতি নিপুণ রায় ও তার অনুসারীরা প্রোগ্রাম করতে চায়? আমরা আশাবাদী প্রশাসন বিষয়টি বিবেচনা করবেন।
এ বিষয়ে হাজি রেজাউল কবীর পল বলেন, একটি আসনে একাধিক প্রার্থী মনোনয়ন চাইতে পারেন। মনোনয়ন প্রত্যাশীরা যে কোনো স্থানে প্রোগ্রাম করতে পারেন। আমি বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়া ও মিলাদের অনুষ্ঠান আয়োজন করায় গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও নিপুণ রায় চৌধুরীর মাথা নষ্ট হয়ে গেছে। একই দিনে তারাও প্রোগ্রাম করার হুমকি দিচ্ছেন। কেরানীগঞ্জে তারা পরিবেশটা নষ্ট করে ফেলেছে।
এ ব্যাপারে জানতে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা বিএনপির সভাপতি নিপুণ রায় চৌধুরীর মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল দিলেও রিসিভ না করায় তার মন্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
জিনজিরা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মোকাররম হোসেন বলেন, আগামী শুক্রবার জিনজিরা ঈদগাহ মাঠে আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছি। আমাদের পক্ষ থেকে জিনজিরা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আশরাফ হোসেন মাঠ পরিচালনা কমিটি ও কেরানীগঞ্জ মডেল থানাকে চিঠি দিয়ে আবেদন করা হয়েছে। আয়োজনের অনুমতির জন্য গত ১৮ আগস্ট জিনজিরা ঈদগাহ মাঠ সভাপতি ও কেরানীগঞ্জ মডেল থানা বরাবর লিখিত আবেদন করেছি। আশা করছি আমাদের আবেদনটি প্রশাসন গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করবে।
কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল হক ডাবলু সাংবাদিকদের বলেন, আগামী শুক্রবার জিনজিরা ঈদগাহ মাঠে অনুষ্ঠান করার জন্য বিএনপির দুটি পক্ষ থেকে আবেদন পেয়েছি। এলাকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বিএনপি নেতা গয়েশ্বর রায় সমর্থিত পক্ষ ঈদগাহ মাঠ ও যুবদল নেতা রেজাউল কবীর পলের সমর্থিত পক্ষ জিনজিরা কালাচাঁন প্লাজা এলাকায় পৃথক স্থানে অনুষ্ঠান করবেন। দুটি অনুষ্ঠানস্থল যেহেতু কাছাকাছি তাই তাদের কর্মী ও সমর্থকদের ভিন্ন সড়ক ব্যবহার করে কর্মসূচি পালন করার জন্যে অনুরোধ করা হয়েছে।